শুক্রবার দুপুর থেকে যাত্রীবাহী যানবাহনের সৃষ্টি হওয়া যানজট শনিবার সন্ধ্যায় ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ১২ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ফেরির নাগাল পেতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া ঘাটের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. সহিদ বলেন, “ঘাটের যানবাহনের সারি চলে গেছে ১২ কিলোমিটার ছাড়িয়ে। ভোগান্তি কমাতে কাজ চলছে। কোনো যানবাহন যেন সিরিয়াল ওভারটেক করে ফেরিতে উঠতে না পারে সেদিকে নজরদারি রাখছে।”
সন্ধ্যায় ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, অপেক্ষায় থেকে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। অনেক যাত্রী গরমে বাসে থাকতে না পেরে বাইরে হাঁটাহাঁটি করছেন। অনেকেই আবার ঘাট এলাকায় গাছের নীচে অথবা চায়ের দোকানে ভিড় করছেন।
এ ছাড়া লঞ্চের যাত্রীদের ১০ কিলোমিটার দূরে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে যানবাহন না পেয়ে অনেক যাত্রী হেঁটেই ঘাটে এসে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।
৫ নম্বর ফেরি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পন্টুনের ওপর দুই শতাধিক যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন ফেরির জন্য। সেসময় বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নামে একটি ছোট ফেরি ভিড়তেই যাত্রীরা সেটিতে উঠেন। ভিড়ের কারণে কয়েকটি প্রাইভেটকার, বাস ও কয়েকশ যাত্রী নিয়ে ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
অপরদিকে পণ্যবাহী ট্রাকের সারি দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছাড়িয়েছে।
রাবেয়া পরিবহনের যাত্রী মারুফ জাহান বলেন, সকাল ৯টায় ঘাট এলাকায় এসেও ফেরিতে উঠতে পারিনি। এখন সন্ধ্যা ৭টা বাজে, ফেরিতে উঠতে আরও দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। প্রচণ্ড গরমে শিশুবাচ্চা নিয়ে খুবই দুর্ভোগে আছি।
আরেক যাত্রী ইব্রাহিম খান বলেন, “খানখানাপুর এলাকায় বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ঘাটে আসার কোনো যানবাহন না পেয়ে গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। পরে সেখান থেকে একটি মাহেন্দ্র করে ঘাটে এসেছি। এত জ্যাম এর আগে কখনও দেখি নাই।”
যশোর থেকে আসা তরমুজ বোঝাই ট্রাকের চালক মোস্তফা বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে আট কিলোমিটার দূরে আটকে ছিলাম। সেখান থেকে একটু একটু করে এগোচ্ছি। এখনও দুই কিলোমিটার দূরে আছি। গাড়িতে তরমুজ বোঝাই দেওয়া আছে। গরমে পচে পানি পড়ছে।”
এ বিষয়ে জানতে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ে গিয়ে কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে ঘাট ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন ও প্রফুল্ল চৌহানের মুঠোফোনে কল দিলেও তারা তা রিসিভ করেননি।
তবে সকালে ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এই নৌপথে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।