গত ৩০ এপ্রিল ঢাকার বনানী ডিওএইচএসের একটি বাড়ি থেকে শেখ সোহেব সাজ্জাদ (৪৪) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়িটির মালিক তার শ্বশুর শাখাওয়াত হোসেন।
লাশ উদ্ধারের পর সাজ্জাদের ভাই শেখ সোহেল সায়াদ আহমেদ বাদী হয়ে ভাবি সাবরিনা শারমীন (৩০) এবং তার বন্ধু কাজী ফাহাদের (২৭) বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি কাজী সাহান হক রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘শনিবার ফাহাদকে গ্রেপ্তারের পর আমরা তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছিলাম। আদালত কারা ফটকে একদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।”
সাজ্জাদের স্ত্রী সাবরিনাকেও গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজছে পুলিশ।
মামলার অগ্রগতি তদারককারী ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এখনো সোহেবের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাইনি। প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে, তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন না অন্য কিছু হয়েছে।”
২০১৭ সালে সাবরিনার সঙ্গে সাজ্জাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রেই ছিলেন। ২০১৮ সালের মে মাসে সাবরিনা একা দেশে ফিরে ওয়ারিতে শ্বশুরবাড়ির পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন।
তখনই প্রতিবেশী কাজী ফাহাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে সাজ্জাদের ভাইয়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, এ নিয়ে সাবরিনার সঙ্গে তার স্বামীর ফোনালাপে ঝগড়া হত।
গত ১৬ মার্চ দেশে ফিরে বনানী ডিওএইচএসে শ্বশুরবাড়িতে থাকা শুরু করেন সাজ্জাদ।
মামলায় বলা হয়, তখন সাজ্জাদের পাসপোর্ট ও ফোনটি নিয়ে নেন সাবরিনা। বারবার চাইলেও ফেরত দেননি। এক পর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল বাসা থেকে বেরিয়ে যান সাবরিনা।
এরপর পাসপোর্ট ও ফোন ফেরত পেতে নানা চেষ্টা করেও না পেয়ে মানসিক চাপ থেকে সাজ্জাদ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বলে এজাহারে বলা হয়।
মামলার বাদী শেখ সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১০ বছর ধরে সাজ্জাদ যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তিনি অনলাইন বাজার ‘অ্যামাজন’ এ কাজ করেন। সাবরিনা শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান, সেখানে পরিচয়ের পর ২০১৭ সালে বিয়ে করেন তারা।
সাবরিনা ও সাজ্জাদ দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে বলে জানান সোহেল।