ক্যাটাগরি

আগামী নির্বাচনে কত আসনে ইভিএম?

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সবার আস্থা অর্জনের জন্য সংলাপে ব্যস্ত। পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় ইতোমধ্যে ইভিএম নিয়ে মতামত এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ এখনও বাকি।

নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান বলছেন, এ মুহূর্তে প্রায় ১০০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা ইসির রয়েছে। আরও বেশি আসনে ইভিএম ব্যহারের ব্যাপারে জন্য কমিশন সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আগামী বছরের শেষভাগে হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। ফলে আগামী দেড় বছরের মধ্যেই প্রশিক্ষণ, দক্ষ জনবল তৈরি, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ সার্বিক কাজও গুছিয়ে নিতে হবে সাংবিধানিক সংস্থাটিকে।

যন্ত্রে ভোটগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য না ‍ঘুচলেও নতুন নির্বাচন কমিশন আগের ধারাবাহিকতায় ইভিএম নিয়ে এগিয়ে যেতে আগ্রহী।

আহসান হাবিব খান বলছেন, ইভিএমে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ‘স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত’, কোনো ধরনের অসাধু প্রক্রিয়া অবলম্বনের ‘সুযোগ নেই’। দলগুলোকেও এটা তারা বোঝানোর চেষ্টা করবেন।

“রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে আমরা সচেষ্ট। এ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির সাথেও আমরা বসবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আইটিতে দক্ষ প্রকৌশলীদের ইভিএম পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।”

>> একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোটকেন্দ্র ছিল ৪০ হাজার ১৮৩টি; ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি

 

>> প্রত্যেক ভোটকক্ষের জন্য একটি ইভিএম প্রয়োজন হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির ঝুঁকি এড়াতে অতিরিক্ত ইভিএম সংরক্ষণ করা হয়। 

 

>> বর্তমানে ইসির হাতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৫টি ইভিএম রয়েছে। 

 

>> ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছিল।

 

>> এরপর উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন, কয়েকটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়েছে  

 

>> গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে পুরোপুরি ইভিএমে ভোট হয়। ৩১ জানুয়ারি দেশের ২১৯ ইউপিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১১ কোটি ৩২ লাখের বেশি ভোটারের জন্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪২ থেকে ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্র করতে হবে। তাতে ভোটকক্ষ হবে আড়াই লাখের বেশি। আর ইসির হাতে ইভিএম আছে দেড় লাখের মত।

২০১০ সালে ইভিএম চালুর পর স্থানীয় নির্বাচনেই তা ব্যবহার হচ্ছিল। এটিএম শামসুল হুদা কমিশন ওই ইভিএম সিটি করপোরেশনে বড় পরিসরে ব্যবহার করেছিল, কিন্তু সংসদ নির্বাচনে নিতে পারেনি।

২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি আগের ইভিএমকে অনেকটা অকেজো অবস্থায় ফেলে গিয়েছিল। তখন সিটি নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার হোঁচট খায়।

এরপর কে এম নূরুল হুদার কমিশন নতুন করে ইভিএম নিয়ে এগোয়। আইন সংশোধন করে ছয়টি সংসদীয় আসনে ইভিএম ব্যবহারও করে।

এ ধারাবাহিকতায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনও এখন ইভিএম ব্যবহার বাড়াতে চাইছে।

বিশিষ্টজনদের সঙ্গে চার ধাপের বৈঠক শেষে সিইসি বলেছিলেন, “অধিকাংশই ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ যন্ত্রে পেশীশক্তির ব্যবহার করা যায় না, জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। আরও কতগুলো ভালো দিক রয়েছে।

“কেউ কেউ বিপক্ষে বলেছে। সবকিছু স্টাডি করছি। আমরা কতগুলো সভা করেছি। আমরা ওপেন হতে চাই। যদি ত্রুটি থাকে, তা কাটিয়ে আপনার ব্যবহার করতে বলেছেন। অবশ্যই আমরা সেটা দেখব।”

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বড় বিরোধী দল বিএনপি ইভিএম নিয়ে আগের মতই দুই মেরুতে অবস্থান করছে।

শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং এখন ইভিএম- অর্থাৎ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। সাথে সাথে ভোটের রেজাল্ট পাবে। যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে, আমরা সেটাই চাই।”

অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইভিএমে তো পরের ব্যাপার। আওয়ামী লীগের সরকার পদত্যাগ না করলে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে নির্বাচনের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।”

নতুন ইসির অধীনে এখনও কোনো নির্বাচন হয়নি, তাই এক অর্থে জনআস্থার পরীক্ষাও তাদের হয়নি।

সামনে ১৫ জুন রয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, যেখানে ভোট হবে ইভিএমে হবে। এ নির্বাচনে অনেক পরীক্ষারই মুখোমুখি হতে হবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের কমিশনকে। 

পুরনো খবর


তাদের নেতৃত্ব কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
 


ইভিএমে কেন্দ্র প্রতি ব্যয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা
 


ইভিএমে কেন্দ্র প্রতি ব্যয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা
 


ইভিএম তুমি কার?
 


ইভিএমের ভোটে ভাবনায় ভোটার উপস্থিতি
 


সবাইকে ভোটে আনতে ইসিকে আস্থার সঙ্কট কাটানোর পরামর্শ
 


‘আস্থা অর্জনের চ্যালেঞ্জ’ নতুন ইসির সামনে