ক্যাটাগরি

প্রতিবন্ধী কিশোরকে ফ্লাইটে উঠতে বাধা, ভারতে সমালোচনার ঝড়

যার প্রেক্ষিতে ভারতের বিমান পরিবহন মন্ত্রী ঘটনা তদন্ত করে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও দেশটির অভ্যন্তরীন এয়ারলাইনস ইন্ডিগো অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানায় বিবিসি।

এক টুইটে সোমবার বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের আচরণ আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। কোনো মানুষের এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের মধ্যে দিয়ে যাওয়া উচিত না।”

সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালকও ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

কী ঘটেছিল?

রাঁচি বিমানবন্দরে শনিবার ওই ঘটনা ঘটে। ফ্লাইটের আরেক যাত্রী ফেসবুক পোস্টে পুরো ঘটনা তুলে ধরেন।

মনীষা গুপ্তা নামে ওই যাত্রী তার ফেসবুক একাউন্টে লেখেন, ফ্লাইটে ওঠার আগেই ওই কিশোরকে দেখে মনে হচ্ছিল সে খানিকটা বিক্ষুব্ধ হয়ে আছে।

“ফ্লাইটে ওঠার প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় এবং গেইটে পৌঁছানোর পর তাকে দেখে মনে হচ্ছিল সে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত, ক্ষুব্ধ এবং বিভ্রান্ত। তাকে কিছুতেই শান্ত করা যাচ্ছিল না।”

“তার বাবা-মা খুব ধৈর্যের সঙ্গে তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। তারা কখনো তাকে ভুলিয়ে, কখনো খানিকটা কঠোর হয়ে বা অনেকবার জড়িয়ে ধরে তাকে শান্ত রাখতে চাইছিল।”

ইন্ডোগোর স্টাফরা ওই কিশোরকে দেখতে পেয়ে তার বাবা-মাকে সতর্ক করে বলেও জানান মনীষা। তারা বলেন, যদি শিশুটি ‘শান্ত না হয় এবং স্বাভাবিক আচরণ না করে’ তবে তাকে তারা ‘ফ্লাইটে উঠতে দেবেন না’।

“তারপরই আমরা ক্ষমতার পূর্ণ প্রদর্শনের সাক্ষী হলাম।”ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিল, ওই শিশুটিকে তারা ফ্লাইটে উঠতে দেবে না। কারণ, সে ‘অন্য যাত্রীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’। ভ্রমণের উপযুক্ত হতে তাকে আগে ‘স্বাভাবিক’ হতে হবে।

ফ্লাইটের অন্যান্য যাত্রীরা ইন্ডিগো স্টাফদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বলেও জানান মনীষা। তারা এমনকী এটাও নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছিলেন, শিশুটিকে নিয়ে তাদের ‘কোনো আপত্তি নেই’ এবং তাকে যেন তার বাবা-মা সহ ফ্লাইটে উঠতে দেয়া হয়।

“একই ফ্লাইটে একদল চিকিৎসক ভ্রমণ করছিল। তারা বলেছিলেন, যদি মাঝ আকাশে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য জনিত জটিলতা দেখা দেয় তবে তারা শিশুটি ও তার বাবা-মা কে পূর্ণ সহায়তা দেবেন।”

কিন্তু এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অটল থাকে। মনীষা জানান, ইন্ডিগোর ব্যবস্থাপক এসে বরং জোর দিয়ে একথাই বলতে থাকেন যে, শিশুটিকে ‘নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না’, সে ‘পাগলামি করছে’।

মনীষার পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষের আচরণের তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা শুরু হয়। পরে এক বিবৃতিতে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা তাদের যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ওই পদক্ষেপ নিয়েছিল।

তারা আরো জানায়, তারা পরিবারটির বিশ্রামের জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করেছে এবং পরদিন সকালের ফ্লাইটে তারা নিজেদের গন্তব্যে চলে গেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। কর্মীদের বিষয় হোক বা গ্রাহকদের জন্য, ইন্ডিগো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্থা এবং এজন্য আমরা গর্বিত। এ করণে প্রতি মাসে ৭৫ হাজারের বেশি যাত্রী ইন্ডিগোর সঙ্গে উড়ে যান।”