এই গীতিকার, কবি ও সাংবাদিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার রাত ৮টায় মারা
যান বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক
ইলিয়াস খান।
তিনি বলেন, “আজিমপুরে বাসায় অসুস্থ
হয়ে পড়লে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা দেখে বলেন,
তিনি আগেই মারা গেছেন।”
কে জি মোস্তফার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী
সদস্য ছিলেন।
ইলিয়াস খান বলেন, “গতকালও তিনি প্রেস ক্লাবে
এসেছিলেন; হঠাৎই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।”
সোমবার জোহরের পর প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে কে জি মোস্তফার জানাজা হবে বলে
জানান ইলিয়াস।
কে জি মোস্তফার জন্ম ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। ১৯৬০ সালে
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
দৈনিক ইত্তেহাদে পত্রিকা দিয়ে তার সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। এরপর তিনি কাজ
করেছেন দৈনিক মজলুম, দৈনিক গণকণ্ঠ, দৈনিক স্বদেশসহ নানা সংবাদপত্রে।
তিনি ১৯৭৬ সালে বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা
অধিদপ্তরের সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে সিনিয়র সম্পাদক (যুগ্ম সচিব পদমর্যাদা)
হিসেবে অবসর নেন।
কে জি মোস্তফা বাংলাদেশ স্কাউটের মুখপত্র ‘অগ্রদূত’র ব্যবস্থাপনা
সম্পাদক ছিলেন কিছুদিন। জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে প্রকাশিত কবিতা সঙ্কলন ‘কবিতাপত্র’ সম্পাদনার
দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।
কে জি মোস্তফা অনেক সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। এর মধ্যে
রয়েছে ‘মায়ার সংসার’, ‘অধিকার’, ও ‘গলি থেকে
রাজপথ’।
কে জি মোস্তফার লেখা ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো’ গানটি
এহতেশাম পরিচালিত রহমান ও শবনম অভিনীত ‘রাজধানীর
বুকে’ সিনেমার। আর ‘আয়নাতে
ওই মুখ’ গানটি অশোক ঘোষ পরিচালিত রাজ্জাক-শবনম অভিনীত ‘নাচের
পুতুল’ সিনেমার গান।
কালজয়ী এই দুটি গানেরই সুরকার রবীন ঘোষ। একটি গান গেয়েছেন তালাত মাহমুদ,
অন্যটি গেয়েছেন মাহমুদুন্নবী।
কে জি মোস্তফার বেশ কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ, ছড়ার বই, গানের বইও প্রকাশিত
হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- কাছে থাকো ছুঁয়ে থাকো, উড়ন্ত রুমাল, চক্ষুহীন প্রজাপতি,
সাতনরী প্রাণ, এক মুঠো ভালোবাসা, প্রেম শোনে না মানা।