সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগে থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লাইন পড়ে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নেওয়া সতর্কাবস্থার কারণে বেশি সময় লাগবে বলে এবার আগেভাগেই ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়েছে।
সন্ধ্যা ৭টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে এবং এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেসরকারি ফলাফল আসতে শুরু করবে।
এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ৩৬ বছর আগে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো মার্কোস পরিবারের আবার ফিলিপিন্সের শাসন ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা একসময় অচিন্তনীয় ছিলে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফিলিপিন্সের সাবেক একনায়ক ফের্দিনান্দ মার্কোস ও তার স্ত্রী সাবেক ফার্স্ট লেডি ইমেলদা মার্কোসের ছেলে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফের্দিনান্দ ‘বংবং’ মার্কোস জুনিয়র (৬৪) এ নির্বাচনে জিতবেন বলে বিভিন্ন জরিপ থেকে ধারণা পাওয়া গেছে।
ভোটে মার্কোস জুনিয়রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন লেনি রোব্রেদো (৫৭), ২০১৬ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কোস জুনিয়রকে হারিয়েছিলেন তিনি।
মতামত জরিপগুলোতে বংবং নামে পরিচিত মার্কোস জুনিয়র প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ে ৩০ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন, পাশাপাশি চলতি বছর হওয়া সবগুলো জরিপেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন তিনি।
কামারিনে সুর প্রদেশের একটি কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর আরেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী লেনি রোব্রেদো অমোচনীয় কালি লাগানো আঙ্গুল প্রদর্শন করছেন। ছবি: রয়টার্স
যদি শেষ পর্যায়ে এসে ভোটারদের সিদ্ধান্ত পাল্টায় বা ভোট পড়ার হার কম হয় তাহলে রোব্রেদোর জেতার একটা সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মার্কোস জুনিয়র বাস্তব কোনো নীতি উপস্থাপন না করলেও তিনি ফিলিপিন্সের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তের ধারাই বজায় রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুতার্তের নির্মম, লৌহমানব ধরনের শাসন তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল আর মেয়াদের পুরো ছয় বছর দোর্দণ্ড প্রতাপে শাসন করে গেছেন তিনি। কিন্তু ফিলিপিন্সে প্রেসিডেন্ট পদে চার বছরের বেশি থাকা কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রার্থী হতে পারেন না, তাই দুতার্তেকে বিদায় নিতে হচ্ছে।
সাবেক মানবাধিকার আইনজীবী ও কট্টর উদারপন্থি রোব্রেদো শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ পরিষেবা উন্নয়ন, দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই ও বাজার প্রতিযোগিতা উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মার্কোস জুনিয়র তার নিজ প্রদেশ ইলোকোস নর্তের কেন্দ্রে নিজের ভোটটি দিয়েছেন। বুথ থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে খুব অল্প সময় কথা বলে কেন্দ্র ত্যাগ করেন তিনি। আর রোব্রেদো কামারিনে সুর প্রদেশের একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
এ নির্বাচনে মার্কোস জুনিয়রের রানিং মেট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট দুতার্তের কন্যা সারা দুতার্তে কারপিও। সারা দুতার্তে ও তার বাবার বিপুল জনপ্রিয়তা মর্কোসের জনসমর্থন তৈরিতে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে বলে পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষকদের। তবে প্রেসিডেন্ট দুতার্তে প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানাননি।
এ নির্বাচনে ফিলিপিন্সের মোট ভোটার প্রায় সাড়ে ছয় কোটি। এ দিনের ভোটের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি সেনেট, কংগ্রেস, বিভিন্ন নগরীর মেয়র ও কাউন্সিলরসহ প্রায় ১৮ হাজার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: