ক্যাটাগরি

বংবং: ফিলিপিন্সে মার্কোসদের সাম্রাজ্য যিনি ফিরিয়ে আনতে চান

যার পরিবারের এমন রেকর্ড, সেই ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র কীভাবে ৯ মে অনুষ্ঠেয় ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে আছেন, সেই প্রশ্নের ‍উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে বিবিসি।

৬৪ বছর বয়সী মার্কোস জুনিয়র তার দেশে পরিচিত বংবং নামে। বিবিসি লিখেছে, তার জনপ্রিয়তার নেপথ্যে রয়েছে ফিলিপিন্সের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের জটিল ইতিহাস, বংশানুক্রমিক সমর্থক গোষ্ঠী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারের কৌশল।

উত্তরের মালাকানাং প্রাসাদে বংবংয়ের শৈশবের সেই ছবি। ছবি: বিবিসি

উত্তরের মালাকানাং প্রাসাদে বংবংয়ের শৈশবের সেই ছবি। ছবি: বিবিসি

একটি সোনার মুকুট, একটি সাদা ঘোড়া

ফিলিপিন্সে মার্কোস পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত লোকোস নর্তে এলাকায় স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক রীতিতে গড়া আকর্ষণীয় এক প্রাসাদের নাম ‘উত্তরের মালাকানাং’।

মূল মালাকানাং প্রাসদ হল ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন। আর রাজধানী ম্যানিলা থেকে কয়েকশ মাইল দূরে উত্তরের মালাকানাং প্রসাদটি ১৯৬০ এর দশকে ফিলিপিন্সের পর্যটন কর্তৃপক্ষ উপহার হিসাবে মার্কোস পরিবারকে দিয়েছিল; বংবংয়ের বাবা ফের্দিনান্দ মার্কোস তখন দেশের প্রেসিডেন্ট।

বর্তমানে প্রাসাদটি জনসাধরণের জন্য উন্মুক্ত। মার্কোস পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত এ ভবন দেখতে এসে সমর্থকরা ফের্দিনান্দ মার্কোস এবং তার স্ত্রী মা ইমেলদা মার্কোসের প্রতিকৃতি সামনে সেলফি তোলেন। যেসব ঘরে তারা একসময় থাকতেন, সেসব কক্ষ ঘুরে দেখেন।

বংবং যে ঘরে তার শৈশব কাটিয়েছেন, সেখানে সুসজ্জিত একটি চার খুঁটিওয়ালা পালঙ্কের পাশে ফিলিপিন্সের হবু নেতার অসাধারণ একটি চিত্রকর্ম ঝোলানো হয়েছে।

তাতে দেখা যায়, মেঘের মধ্য দিয়ে একটি সাদা ঘোড়া ছুটছে। তার পিঠে বংবং, তার মাথায় একটি সোনার মুকুট, এক হাতে ফিলিপিন্সের পতাকা, অন্য হাতে বাইবেল। ছবির এক কোনায় রয়েছে বাইবেলের একটি রেফারেন্স, যার মধ্য দিয়ে এই ছবির অর্থ বোঝা যায়। পবিত্র শহর জেরুজালেমের ওর দিয়ে এক ফেরেশতার উড়ে যাওয়ার গল্প বলা হয়েছে বাইবেলের শ্লোকে। 

১৯৮৬ সালে প্রবল গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন বংবংয়ের বাবা। এরপর বিশ্বব্যাপী মার্কোস পরিবার যেন দুর্নীতির সমার্থক হয়ে ওঠে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং আদালতে দাখিল হওয়া নথিতে মার্কোসদের ব্যাপক বিলাসিতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার অকাট্য সব প্রমাণ উঠে আসতে থাকে।

ইমেলদা মার্কোসের সেই জুতো সম্ভাবর

ইমেলদা মার্কোসের সেই জুতো সম্ভাবর

সেসময় বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে মার্কাস পরিবারের সদস্যদের চমৎকার সব তৈলচিত্র, সোনায় মোড়া বাথটাব, ১৫টি মিঙ্ক কোট, ৫০৮টি ডিজাইনার গাউন এবং মার্কোসের স্ত্রীর ৩ হাজার জোড়া জুতার বিশাল সংগ্রহ দেখতে পান।

তিন যুগ পর, এখন, সেই মার্কোস পরিবারের সন্তান বংবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী এবং জনমত জরিপে তিনি বেশ ভালো অবস্থানে আছেন। মার্কোস পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নির্মমতার সেই সব অভিযোগ নিয়ে তার সমর্থকরা এখন সন্দেহ প্রকাশ করছেন বেশ জোর গলায়।

বিরোধীরা বলে আসছেন, সেই কালো অতীত ঢেকে ফেলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক অপতথ্য ছড়াচ্ছেন বংবংয়ের সমর্থকরা।

মার্কোস পরিবার এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে মার্কোস পরিবারের পক্ষে প্রপাগান্ডার পোস্টে ফেসবুক ভরে গেছে। মার্কোসদের মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হচ্ছে অসংখ্য বেনামা অ্যাকাউন্ট থেকে। 

বিবিসি লিখেছে, অতীত নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় এই অপপ্রচার এতটাই বিস্তৃত যে মানুষ পরম বিশ্বাসের সঙ্গে সেইসব ভুল তথ্য আউড়ে যাচ্ছে।

যে ধারণাটি প্রচার করা হচ্ছে, তা হল- মার্কোসের শাসনামলকে স্বৈরশাসন বলা হলেও আসলে তা ছিল দেশের জন্য ‘সুবর্ণ সময়’। অথচ পরিসংখ্যানের সত্য বলছে, বিদেশি ঋণের ভারে জর্জরিত ফিলিপিন্সের অর্থনীতি সে সময় খাদের কিনারে পৌঁছে গিয়েছিল।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস

সাবেক প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস

আনুগত্য এবং উত্তরাধিকার

রাজধানী ম্যানিলার ৭১ বছর বয়সী জেসুস বাতিস্তা বংবংয়ের একজন কট্টর সমর্থক। তিনি বিরাট এক আবর্জনার স্তূপে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। ওই আবর্জনার স্তূপকে স্থানীয়রা বলেন ‘স্মোকি মাউন্টেইন’।

১৯৮৩ সালে তিনি শহরের ট্রাফিক বাহিনীতে পেনশনসহ পূর্ণকালীন চাকরির প্রস্তাব পেয়েছিলেন। সে সময় ম্যানিলা শহরে সরকার নিযুক্ত গভর্নর ছিলেন মার্কোসের স্ত্রী ইমেলদা।

বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় বাঁশের একটি ভাঙা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসেছিলেন বাতিস্তা। তিনি বলেন, সরকারি চাকরির সুযোগ দেওয়ায় তিনি মার্কোসের স্ত্রী ইমেলদার কাছে ঋণী। তার বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ থাকলেও তার ছেলে বংবংকে তিনি ভোট দেবেন।

“আমি কখনো দুর্নীতি দেখিনি, এটা শুধু শোনা কথা। আমার মনে হয় তাদের শত্রুরা তাদের নাম কলঙ্কিত করেছে। ঠিক না?”

আশির দশকে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বিক্ষোভকারীদের ঢুকে পড়ার সেই ঘটনা যে কজন সাংবাদিক সচক্ষে দেখেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জিম লরি তাদের একজন।

বিবিসিকে তিনি বলেন, “ইমেলদার ওয়ার্ডরোব রুমে নিউ ইয়র্কের বার্গডর্ফ গুডম্যান এবং প্যারিস ও রোমের বিভিন্ন ডিজাইনার শপের লেবেলসহ কয়েকশ গাউন ও পোশাক ছিল। তিনি সেগুলো কখনও পরেননি… এরকম দরিদ্র একটা দেশে ওইরকম বিলাস সামগ্রী একরকম কুৎসিত দেখাচ্ছিল।”

জিম লরির ভাষায়, এগুলো ছিল মার্কোস পরিবারের ‘ব্যাপক দুর্নীতির নমুনামাত্র’।

মার্কোস পরিবার কীভাবে লাখ লাখ ডলার অবৈধভাবে সুইস ব্যাংকে স্থানান্তর করেছে এবং নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনে অসংখ্য সম্পত্তি কিনেছে, তার তথ্য পরে বিভিন্ন নথিতে বেরিয়ে আসে।

বিবিসি লিখেছে, বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক আদালতে মামলা হয়েছে। কোনো কোনো মামলায় রায় এসেছে, কিছু মামলা এগোয়নি।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নিউ ইয়র্ক সিটিতে ১৯৯০ সালের একটি প্রতারণার মামলা, যেখানে মার্কোসের স্ত্রী জিতে যান এবং তার পরিবারের জন্য ফিলিপিন্সে ফেরার পথ খুলে যায়।

বংবং তার সেই বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা নিয়ে দ্য কিংমেকার ডকুমেন্টারিতে বলেছিলেন, “আমি তো (সাধারণ) কোচে বাড়ি আসতে পারি না, আমি সবসময় ফার্স্টক্লাসে ভ্রমণ করেছি।”

ইমেলদা মার্কোস

ইমেলদা মার্কোস

‘নেতা হতে যার জন্ম’

বংবংকে নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল অল্প বয়স থেকেই।

১৯৮৬ সালের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অভ্যুত্থানের সময় যখন মার্কোস পরিবার যখন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে যেতে বাধ্য হল, ২৮ বছর বয়সী বংবং সেদিন বাবার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন একনিষ্ঠ ছেলের মতই।

অবশ্য ১৯৭২ সালে তার বাবা একটি ডায়েরিতে ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছিলেন, “বংবংকে নিয়েই আমাদের দুঃশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। সে একেবারেই উদাসীন, আর অলস।”

১৯৭৫ সালে বংবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) কোর্সে পড়তে যান। ব্রিটেনে বলা হয়, এই কোর্স হল রাজনীতিবিদ হিসাবে ক্যারিয়ার গড়ার প্রবেশদ্বার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি স্নাতক পাস করতে পারেননি, যদিও বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন না।

ফিলিপিন্সের সংবাদ পোর্টাল ভেরাফাইলসের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, দুইবার পরীক্ষায় ফেল করার পর ফিলিপিন্সের কূটনীতিকরা সামাজিক বিজ্ঞানে একটি বিশেষ ডিপ্লোমা দেওয়ার জন্য বংবংয়ের পক্ষে লবিং করেছিলেন সে সময়।

অবশ্য ডিগ্রি নিয়ে ওই বিতর্ক বংবংয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে থামাতে পারেনি। অভ্যুত্থানের ধকল সামলে ফিরে আসার পর তিনি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন।

আসন্ন ভোটে তার রানিং মেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট) হিসেবে আছেন ৪৩ বছর বয়সী সারা দুতার্তে, যিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে।

বিতর্কিত, তবে জনপ্রিয় দুতার্তে ফিলিপিন্সের সংবিধানে সীমার কারণে আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

২০১৬ সালে তিনি ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করে হাজারো মানুষকে বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তার মেয়ে সারা দুতার্তে দেশকে আবার ‘ঐক্যবদ্ধ করার’ লক্ষ্য নিয়ে বংবংয়ের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

১৮ বছর বয়সীদের জন্য নির্দিষ্ট সময় সামরিক বাহিনীতে কাটানো বাধ্যতামূলক করতে চান তিনি। আর পুনর্বাসনে রেখেও অপরাধীদের সংশোধন না হলে তিনি মৃত্যুদণ্ড দিতে চান।

২০০৯ সালে ফাঁস হওয়া ম্যানিলার মার্কিন দূতাবাসের কটি নথিতে সারা দুতার্তেকে বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে- “তিনি বাবার মতই কঠোর মনের মানুষ, তার সাথে কাজ করা কঠিন।”

সম্ভবত সারার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল ২০১১ সাল, তখন তিনি ম্যানিলার মেয়র। একটি বস্তি উচ্ছেদের বিরোধিতা করে আসছিলেন সারা। আর তার নির্দেশ না মানায় আদালতের এক কর্মকর্তার মুখে তিনি কয়েকটি ঘুষি চালিয়ে দেন।

সমর্থকদের সামনে ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ওরফে বংবং

সমর্থকদের সামনে ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ওরফে বংবং

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব

বিবিসি লিখেছে, বংবং মার্কোস কীভাবে এত শক্তি নিয়ে ফিলিপিন্সের রাজনীতিতে ফিরতে পারলেন, তা বোঝার জন্য লোকোস নর্তে প্রদেশের বাইরে যাওয়ার দরকার হয়  না।

সেখানে অনেকেই মার্কোস পরিবারের প্রতি অনুগত। ১৯৭২ সালে ১৪ বছর দেশের বাকি অংশ সামরিক আইনের অধীনে থাকলে মার্কোসের এলাকা তহবিলের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেত।  

এক সাংবাদিক বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, “মনে করুন একটি ভয়ঙ্কর টাইফুন পুরো দেশকে ধ্বংস করছে, কিন্তু লোকোস নর্তেকে সেটা ছুঁতেও পারছে না।“

এখানকার বাসিন্দারা বিশ্বাস করতে চায় না যে মার্কোস পরিবার দুর্নীতি কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী। তাদের এই অনুভূতিকেই চতুরভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাজে লাগানো হয়েছে।

মার্কোসকে ভোট না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী জেডএসএ জেডএসএ রাভাল। তার ভাষ্য, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা (বংবং ও অন্যরা) বিষয়টিকে অন্যদিকে পরিচালিত করে। অর্থাৎ, সে দুর্নীতিগ্রস্ত হলেও তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ অবকাঠামো উন্নয়নের মত অনেক অর্জন তাদের রয়েছে। এদের সঙ্গে তর্ক করা অর্থহীন।”

বংবং সমর্থকদের অনেকের গুণ্ডামি এবং হয়রানির শিকার হয়েছেন জানিয়ে রাভাল বলেন, “তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে, কেন তাদের ভোট দিচ্ছি না? তুমি একজন ইলোকানো, কেন তুমি অন্য কাউকে ভোট দেবে? কিন্তু আমার উত্তর সহজ, আমি একজন ফিলিপিনো।”

যুক্তরাজ্যের বিতর্কিত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ফার্ম কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কর্মী ব্রিটানি কাইজার নিউজ সাইট র‌্যাপলারকে বলেন, “বংবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিবারের ইমেজ পুনরায় ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

নির্বাচনে বংবংয়ের রানিং মেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী) হিসেবে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে সারা দুতার্তে

নির্বাচনে বংবংয়ের রানিং মেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী) হিসেবে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে সারা দুতার্তে

বিবিসি লিখেছে, এই রিব্র্যান্ডিং মানে কেবল ইতিহাসকে নতুন করে লেখার চেষ্টা নয়, সোশাল মিডিয়ার বেনামা অ্যাকাউন্টগুলো বারবার সাংবাদিকদের নিশানা করে অপপ্রচার চালিয়েছে, যাতে সত্যকে বিপথে চালানো যায়।

সাংবাদিক লরি যখন জরুরি অবস্থার সময়ের ওপর স্বাধীন ভিডিও প্রতিবেদন ইউটিউবে প্রকাশ করেছিলেন, তখন তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিভিন্ন বেনামা অ্যাকাউন্ট থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল।

লরি বলেন, “এটি এখন একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত বিভক্তি, এত মতের প্রচা, অপপ্রচার সেখানে হচ্ছে,… এগুলো ইতিহাস ও ঘটনার ব্যাপক বিকৃতি করছে।”

ফেইসবুকের মূল সংস্থা মেটা বিবিসির প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে ফিলিপিন্সের বেশ কয়েকটি নেটওয়ার্কসহ ১৫০টির বেশি গোপন চক্রকে চিহ্নিত করে তারা সরিয়ে দিয়েছে।

ফেইসবুকের নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে গত জানুয়ারিতে বংবং সমর্থকদের শত শত অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে টুইটার। তবে এসব বিষয়ে মার্কোসের পরিবারের কেউ বিবিসির সঙ্গে কথা বলতে চাননি, কারণ তাদের ভাষায় এসব সংবাদমাধ্যম মার্কোস পরিবারের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও জনগণের সঙ্গে ‘সরাসরি যোগাযোগ’ করার অন্য উপায় হল বংবংয়ের বিশাল সব জমকালো সমাবেশ।

তার সমালোচকরা বলেন, বংবং সত্যের পথে ‘অসৎ’, সমালোচনায় কান দেন না এবং সবসময় বন্ধু ও তোষামোদকারী বেষ্টিত থাকেন।

তাদের আশঙ্কা, বংবং যদি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে ১৯৮৬ সালে তার বাবা যেখানে শেষ করেছিলেন, তিনি হয়ত ঠিক সেখান থেকে শুরু কবেন।