ক্যাটাগরি

কুমিল্লায় ছাত্রলীগকর্মী হত্যাচেষ্টা: জামিন পাননি রেদোয়ান

কুমিল্লার আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান জানান, মঙ্গলবার কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবু বকর ছিদ্দিক তার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন।

মজিবুর রহমান জানান, জামিন আবেদনের সময় রেদোয়ান আহমেদ আদালতে হাজির ছিলেন না। সোমবার রাত থেকে তিনি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। তার পক্ষে বেশ কয়েকজন আইনজীবী আদালতে জামিন আবেদন করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজালাল মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে রেদোয়ানের পক্ষে অন্তত ৪২ জন আইনজীবী জামিন চেয়ে উপস্থিত হন।

“তখন বাদীপক্ষ হিসেবে আমরা আদালতকে বলেছি প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে নিয়ে দুটি ছেলের হাত ও পায়ে গুলি করা ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। আদালত আমাদের কথায় সন্তুষ্ট হয়ে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে।”

সোমবার চান্দিনা উপজেলা সদরের রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২’-এর মমতাজ আহমেদ ভবনের সামনে এলডিপি ও ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাল্টাপাল্টি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ওইদিন দুপুর থেকে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান নেন। দুপুর সোয়া ২টার দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে কলেজের গেটে গেলে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা গাড়ি থামিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।

কিছুক্ষণ পর দুপুর আড়াইটার দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার গাড়িতে তরমুজের টুকরো ও ঢিল এসে পড়ে। এ সময় রেদোয়ান আহমেদ পর পর দুটি গুলি ছুড়ে দ্রুত চলে যান।

কুমিল্লায় ছাত্রলীগ কর্মীকে গুলি: রেদোয়ানসহ ৪ জন কারাগারে
 

এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে রেদোয়ান চান্দিনায় থানায় আশ্রয় দিলে পুলিশ তাকে আটক করে।

গুলিতে চান্দিনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সদস্য মাহমুদুল হাসান সরকার জনি (২২) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী ও স্থানীয় চান্দিয়ারা গ্রামের নাজমুল হোসেন নাঈম (২৮) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রেদোয়ান আহমেদসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার বিকালে থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন চান্দিনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়।

পরে রেদোয়ানসহ চারজনকে প্রাণনাশের চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ওইদিন বিকালেই চান্দিনা থানা থেকে রেদোয়ানসহ চারজনকে কুমিল্লা আদালতে আনা হয়। রাত ৮টার দিকে আদালতের বিচারক আবু বকর ছিদ্দিক তাদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারেই রয়েছেন তিনি।

মামলার বাদী কাজী আখলাকুর রহমান বলেন, “আমরা রেদোয়ান আহমেদের শাস্তি চাই। ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে তিনি গুলি চালিয়েছিলেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ঘটনা।”

সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়নে কুমিল্লা-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ওই সরকারের শাসনামলের শেষ দিকে বিএনপি থেকে বেরিয়ে তিনি এলডিপিতে যোগ দেন।