জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য
পাওয়া গেছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা
রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নেয়, যা আসবে কাস্টম, মূসক এবং আয়কর খাত থেকে।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ)
মোট রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৮ কোটি টাকা।
সে হিসাবে অর্থবছরের বাকি তিন মাসে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব
আহরণ করতে হবে।
মহামারী পরিস্থিতির ক্রমোন্নতির মধ্যে এই নয় মাসে রাজস্ব আদায়ে
প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল
১ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। এবার তার চেয়ে ২৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বেশি আদায়
করতে পেরেছে এনবিআর।
রাজস্ব আদায়ে গত অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা এবারের সমান
ধরেছিল সরকার। কিন্তু কোভিড মহামারীর মধ্যে শেষ মুহূর্তে লক্ষ্য সংশোধন করে ৩ লাখ
১ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
কিন্তু সেই লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি
টাকা আদায় করা গিয়েছিল। অর্থাৎ গত অর্থবছরে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ঘাটতি ছিল
৪৫ হাজার কোটি টাকা।
এবারও পরিস্থিতি একই দিকে যাচ্ছে কি না- প্রশ্ন করলে এনবিআরের সাবেক
চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এনবিআর
এখনও লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশ দূরে থাকায় কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত খুব
কাছাকাছি যাবে বলে আমার বিশ্বাস।”
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে যুগোপযোগী করার পক্ষে মত জানান
সংস্থাটির সাবেক এই চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে বিপুল
সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু যথাযথ জনবল নিয়োগ ও উদ্ভাবনী পদ্ধতি আবিষ্কার করে
টার্গেট পূরণে আমাদের যথেষ্ট উদ্যম নেই। এ কারণে অর্থবছরের শেষ দিকে এসে আমাদের আশঙ্কায়
থাকতে হয়।”
এনবিআরকে ‘ডিজিটাল’
প্রতিষ্ঠান বানানোর উপর জোর দিয়ে গোলাম হোসেন বলেন, “একটি
ভিসা কার্ড বা ব্যাংকের অন্যান্য লেনদেনে যেমন আমরা রিয়েল টাইম মেসেজ পাচ্ছি,
তেমনিভাবে এনবিআরকেও বিশ্বমানের ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার পদক্ষেপ নিতে
হবে। রাজস্ব আহরণের নতুন খাত আবিষ্কারেও ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।”
এনবিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আদায়ে
সবচেয়ে বেশি ২০ দশমিক ৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে কাস্টমস বা আমদানি খাতে।
এ খাতে নয় মাসে আদায় হয়েছে ৬৫ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই
সময়ে আদায় হয়েছিল ৫৩ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এবার ভ্যাট বা মূসক খাতে আদায় হয়েছে ৭৫ হাজার ২৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা,
যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। গত বার নয় মাসে আদায়
হয়েছিল ৬৮ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা।
গত মার্চ মাস পর্যন্ত আয়কর খাতে আদায় হয়েছে ৬৩ হাজার ৬৫৮ কোটি
টাকা। চলতি অর্থবছরের নয় মাসের এই আদায় গত
অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। গতবার আদায় হয়েছিল ৫৫ হাজার ৭৯৮ কোটি
৭০ লাখ টাকা।