ঝড়ের পূর্বভাস পেয়ে উপকলীয় জেলার জেলেরা নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে শুরু করেছে। জেলার ৯১ ভাগ জমির পাকা ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। তবে মোংলা বন্দরের আমাদানি রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জেলা ও উপজেলাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। দুর্যোগের সময় যাতে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় নগদ ১৭ লাখ টাকা ও ৫৮৬ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ রয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে অতিবৃষ্টি হলে যাতে সেই পানিতে নিচু এলাকায় জলাবদ্ধ না হতে পারে সেজন্য নদীখালের স্লুইস গেটগুলো পর্যবেক্ষণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসানির পূর্বভাস পেয়ে জেলেরা কূলে ফিরেছে। আর যারা এখনও ফিরতে পারেনি তারা শহরের প্রধান কেবি মাছ বাজার ঘাটে ট্রলার রেখে অবস্থান করছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে মোংলা বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ চলছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ফকরউদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, “মোংলা বন্দরে বর্তমানে দেশী বিদেশী চারটি জাহাজ অবস্থান করছে। ঝড়ের সিগন্যাল না বাড়লে বন্দরের সব কাজ স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। তবে ঝড়ের পূর্বাভাসে মোংলা বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তি হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলার পর বন্দরের সব নৌযান নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া মোংলার কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর ছোটবড় জাহাজগুলোকে বন্দরের অভ্যন্তরে রাখা হয়েছে।”
বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে বাগেরহাট জেলায় ৫৯ হাজার ২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ঝড়ের পূর্বভাসে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের চারটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ৯৭টি রিপার মেশিন দিয়ে জমি মালিকদের ধান কেটে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলার ইতিমধ্যে ৯১ ভাগ জমির পাকা ধান কেটে কৃষক ঘরে তুলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুর্যোগে ক্ষতি হতে পারে তেমন কোন ফসল বর্তমানে মাঠে নেই। আর যা আছে তা রক্ষা করতে স্ব স্ব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।”
বাকি নয় ভাগ ধান দুইএকদিনের মধ্যে কেটে কৃষক ঘরে তুলতে পারবে বলে বলে আশা করা হচ্ছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।