সংঘাত নিয়ন্ত্রণে সোমবার
জারি করা কারফিউয়ের মেয়াদ বুধবার সকাল ৭টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে বিরোধীদের দাবি
মেনে পদত্যাগ করছেন না প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে।
তিনি নতুন কাউকে প্রধানমন্ত্রীর
দায়িত্ব দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে।
গোটাবায়ার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী
মাহিন্দা রাজাপকসে সোমবার বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিন্তু বিরোধীরা প্রেসিডেন্টের
পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। দিনভর বিক্ষোভ-সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন, আহত হয়
২০০ জনেরও বেশি মানুষ।
মাহিন্দা রাজাপাকসে মঙ্গলবার
সকালে সেনা সদস্যদের নিরাপত্তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রি ছেড়ে
গেছেন।
ছবি: রয়টার্স
কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র
নিহাল থালদুয়ার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত,
তবে বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
নিহাল থালদুয়া জানান, সোমবার
যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের তিন জন গুলিবিদ্ধ ছিলেন। সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে
গ্রপ্তার করা হয়নি।
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড়
অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। বিরোধী দলগুলো এই দুর্দশার
জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকেই
দায়ী করে আসছেন।
সোমবার রাজাপাকসের পরিবারের
সমর্থকরা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভে থাকা সরকারবিরোধীদের ওপর হামলে পড়লে
সংঘাত ব্যাপক মাত্রা পায়। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপকসে।
সন্ধ্যার দিকে সরকারবিরোধী
বিক্ষোভকারীরা কলোম্বো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে হাম্বানটোটায় রাজাপাকসে পরিবারের
পৈতৃক বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। কয়েকজন এমপি এবং সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতেও এ সময় আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
ছবি: রয়টার্স
শ্রীলংকার রাজনীতিতে প্রায়
২০ বছর ধরে আধিপত্য করে এসেছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার সরকারই শ্রীলংকায় দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের
অবসান ঘটাতে তামিল টাইগারদের নির্মূল করেছিল। সেই পরাক্রমশালী নেতাকে বিদায় নিতে হল
অর্থনৈতিক দুর্দশা আর বিক্ষোভের মধ্যে।
তামিল টাইগারদের নির্মূল করে প্রশংসা কুড়ালেও মাহিন্দা
রাজাপাকসের সরকার পরে মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘনের অভিযোগে জর্জরিত হয়। সমালোচকরা
তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগও করেন।
শ্রীলঙ্কার বড় সঙ্কট হয়ে
এসেছে হাতে বৈদেশিক মুদ্রা ডলার না থাকা। এজন্য সরকার মহামারীকে দায়ী করলেও বিশেষজ্ঞরা
দুষছেন অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকে।
শ্রীলঙ্কা সরকার এখন ৫১ বিলিয়ন
দেনার ভারে ডুবতে বসেছে। ঋণের কিস্তি হিসেবে দেশটির এই বছর ৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের
কথা থাকলেও ওই অর্থও দেশটির হাতে নেই।
বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা
সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে হাত পাতলেও তেমন সাহায্য পায়নি।
পুরনো খবর-
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগ
শ্রীলঙ্কায় শেষ জরুরি বৈঠক, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরষ্পরবিরোধী খবর
গোটাবায়ার নতুন মন্ত্রিসভায় বাদ পড়লেন ভাই-ভাতিজা
বিক্ষোভে আর স্লোগানে শ্রীলঙ্কায় নববর্ষ উদযাপন
শ্রীলংকায় বিক্ষোভকারীদেরকে আলোচনার প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী
শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভে নজর কাড়ছে অল্পকটি তাঁবুর যে শিবির
দেশ বাঁচাতে চাইলে বিক্ষোভ থামান: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী
শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ: টলছে রাজাপাকসে পরিবারের শাসন
শ্রীলঙ্কা এমন বেহাল কেমন করে হল?