সোমবার এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন,“আমরা বিষয়টি তালেবানকে সরাসরি জানিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের হাতে অনেকগুলো উপায় আছে, যদি মনে হয় যে ওই সিদ্ধান্তগুলো বদলাবে না, আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে না, তাহলে আমরা আগে বাড়তে প্রস্তুত।”
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো কী হতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি ।
কাবুলের মতো শহুরে এলাকাগুলোতে অনেকেই মাথা ঢাকলেও মুখ ঢাকেন না। ফাইল ছবি: রয়টার্স
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দুই দশক ধরে আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের অর্জিত বিভিন্ন অধিকারের লাগাম টেনে ধরার মতো নীতি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা তালেবানের মন কীভাবে বদলাবে, সে বিষয়েও প্রাইস কোনো ইঙ্গিত দেননি।
শনিবার তালেবান জনসমক্ষে নারীদেরকে মুখ ঢেকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের আগের কট্টরপন্থি শাসনামলের ‘সিগনেচার’ নীতিতে ফিরল।
নারী ও মেয়েদের ওপর তাদের ক্রমবর্ধমান এসব বিধিনিষেধ আফগানিস্তানের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করছে বলে খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর গত বছর অগাস্টে দেশটির ক্ষমতা নেওয়া তালেবান প্রশাসনকে ভবিষ্যতে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের অন্যতম মূল দাবি হিসেবে সামনে রেখেছে। তা সত্ত্বেও তালেবান নারীদের কাজ ও ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে; মেয়েদের সপ্তম শ্রেণির ওপর পড়তেও বাধা দিচ্ছে।
প্রাইস বলেছেন, “মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি আমরা। তালেবান যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলোর বাস্তবায়নে এবং সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার কয়েকটি বদলাতে তাদের ওপর চাপ বাড়ানো অব্যাহত রাখার কিছু পদক্ষেপ আছে, সেগুলো নিতে পারি আমরা।”
আফগানিস্তানে আবার নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক
ওয়াশিংটনের হাতে দরকষাকষির যেসব উপাদান আছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জব্দকৃদ ৭০০ কোটি ডলারের সম্পদ; যার অর্ধেকটা আফগানিস্তানের জনগণের সহায়তায় জো বাইডেন প্রশাসন ছাড় করতে চাইছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে আসছে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ আফগানিস্তানে উন্নয়ন সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আগে থেকেই ধুঁকতে থাকা আফগান অর্থনীতিকে এসব পদক্ষেপ খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছে।
ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আফগানিস্তানের অধিকাংশ নারীই মাথায় কাপড় দিয়ে চলাফেরা করেন, তবে কাবুলের মতো শহুরে এলাকাগুলোতে অনেকেই মুখ ঢাকেন না।
নারীদের বোরকা পরা ও মুখ ঢেকে রাখতে তালেবান শনিবার যে নির্দেশ দিয়েছে একের পর এক টুইটে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি টম ওয়েস্ট।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড তালেবানের এ নির্দেশকে ‘বিবেকবর্জিত পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।