ক্যাটাগরি

বৃষ্টিতে শার্শায় রোরো ধানের ‘ব্যাপক ক্ষতি’

সোমবার সারাদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলের মাঠে পানি জমে গেছে; তলিয়ে গেছে জমির পাকা ধান। এ অবস্থায় ফলন কম হওয়ার পাশাপশি উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা, সে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।

শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মণ্ডল জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে পৌঁছেছে ৫০ ভাগ জমির ধান।

বাকি ২৫ ভাগ কাটা ধান ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে হওয়া বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। 

শার্শা গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী কৃষক সবুজ হোসেন ১৮ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। শ্রমিক না পেয়ে সব ধান সময়মত ঘরে তুলতে পারেননি তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সবুজ বলেন, “আমাগের মাঠের প্রায় সব ধান পানিতে তলায়ে রয়েছে। কেউ কেউ ধান কাইটে জমিতে গাদি মারে (স্তুপ করে রাখা) রাখিছে। সেই গাদির ধানও ডুবে গেছে। এবারের বৃষ্টিতে ম্যালা ক্ষতি হয়ে গেল।”

রাজাপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামান বলেন, “জোনের (কৃষি শ্রমিক) অভাবে এক বিঘে জমির ধান কাটতি পারিনি। দুই বিঘের ধান কাটিছি। বাড়ি আনতি পারিনি। মাঠে ধান ভাসছে।“

বাহাদুরপুর গ্রামের আকবর আলী ছয় বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। ৫৫ বছর বয়সী এ কৃষক বলেন, “মাঠের ধান এখনও পুরো কাটা হয়নি। যা কাটা হইছে, মাঠেই পড়ে আছে। বৃষ্টি একদম শ্যাষ করে দিল। কি করব এখন বুঝতি পারছিনে।”

একই গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৫০) বলেন, “বৃষ্টিতি ধান তো গেলোই, সঙ্গে বিচেলিগুলোও নষ্ট হয়ে গেল। ধান বিক্রির পাশাপাশি বিচেলিগুলো বিক্রি করতি পারলি লাভ একটু বেশি হয়। এখন বিচেলিগুলো পঁচে যাচ্ছে।”

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমন প্রশ্নে   

কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ বলেন, “ধান দ্রুত পানি থেকে শুকনো স্থানে তুলে মাড়াই করে ঘরে তুলে ফেলতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।”

কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এবার শার্শায় এক লাখ ৪৪ হাজার ৮৪৭ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।