মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত-১ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী জানান।
তিনি বলেন, আলোচিত এই মামলায় আদালত ১১ জনকে খালাস দিয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি আদালতে ছিলেন না।
আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার পুলতাডাঙ্গা গ্রামের ফারুক সরদার, পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের কালু ওরফে আলী রেজা এবং কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়া পাড়া ২ নম্বর মসজিদ গলির রোহান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের ফারুক মণ্ডল, ঝিনাইদাহ জেলার ভায়না গ্রামের আলতাফ মেম্বার, লিয়াকত হোসেন, মনোয়ার হোসেন, আকা উদ্দিন, করিমপুর গ্রামের জহির উদ্দিন জোয়ার্দার, খোর্দ বাখইল গ্রামের নুরুল ইসলাম এবং মাছপাড়া গ্রামের খাকচার মণ্ডল।
মামলার বরাত দিয়ে আইনজীবী বলেন, ২০০৯ সালের ৯ আগষ্ট রাতে সদর উপজেলার সোনাইডাঙ্গী গ্রামের মাঠের মধ্যে বংশীতলা গ্রামের শামসুল আলম জোহা (৪৫), ভবানীপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে কাইয়ুম শাখাওয়াতী (৫৫) এবং আয়ুব আলীকে পিছমোড়া বেঁধে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরে তাদের দেহ মাঠেই ফেলে রাখা হয়। আর মাথা তিনটি ১৬ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া শহরের সড়ক ভবন ও গণপূর্ত ভবনের গেটে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনায় শাসসুল আলম জোহার স্ত্রী মোছা. মমতাজ খাতুন বাদী হয়ে নয়জনের নামোল্লেখসহ আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে ইবি আদালতে একটি মামলা করেন। আবার নিহত কাইয়ুম শাখাওয়াতীর ছোট ভাই আব্দুল হাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।
দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ইবি থানার পরিদর্শক গোকুল চন্দ্র অধিকারী। এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ১৮ কোটি টাকার টেন্ডারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আইনজীবী বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ:
রায় ঘোষণার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, আসামিরা জাসদ গণবাহিনীর নেতাকর্মী। তারা আন্তঃজেলা অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সংঘবদ্ধ চক্র ও অভ্যাসগত অপরাধী বিবেচনায় তারা হত্যাকাণ্ডের পর দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে নৃশংসভাবে কঠিন পন্থা অবলম্বন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।