ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান বুধবার
সম্রাটের আবেদনের শুনানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে একই বিচারক দুই দফা এ মামলায়
জামিন নাকচ করেছিলেন।
এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে বিচারক
আগামী ৯ জুন নতুন তারিখ ধার্য করেন।
সম্রাটের বিরুদ্ধে থাকা চার মামলার মধ্যে অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায়
গত ১০ এপ্রিল এবং পরদিন মাদক মামলায় তাকে জামিন দেয় আদালত। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের
দেওয়া ছয় মাসের সাজাও অনেক আগেই শেষ হয়েছে।
ফলে সম্রাটের মুক্তিতে এখন আর কোনো ‘আইনি বাধা নেই বলে তার আইনজীবী এহসানুল
হক সমাজীর ভাষ্য।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক
মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার
অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, সম্রাট বিভিন্ন
অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এই বিপুল সম্পদ অর্জন
করেছেন। তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে
লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন বলেও অভিযোগ আছে। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে
ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার
গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন এবং
বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে
নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর
সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর
গত ২২ মার্চ অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য মামলাটি ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো
হয়।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের
ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে
চলে যান ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম
থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেদিন বিকালে
সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো
হয়।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ
একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং
‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।
ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে
তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়।
রমনা থানার অস্ত্র মামলায় ওই বছর ৬
নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক।
আর অর্থ পাচারের মামলা হয় ২০২০ সালের ১২
সেপ্টেম্বর। গত ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাট ও সহযোগী আরমানের বিরুদ্ধে আদালতে
অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব।
পুরনো খবর
কারাগারেই থাকতে হচ্ছে সম্রাটকে