রোববার জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের দরবেশপাড়ার ‘বাগান বাড়ী’ নামের পার্কে ওই ঘটনা ঘটে বলে ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ।
১৫ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী শহরের আর ইণ্টারন্যাশনাল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বাড়ি জেলা শহরের কালিবাড়ী এলাকায়।
ছেলেটির মায়ের অভিযোগ, রোববার বিকালে কয়েকজন সহপাঠীসহ তার ছেলে ওই পার্কে যান। সহপাঠীরা টিকিট কাটলেও টাকা না থাকায় তিনি পার্কের পেছনদিক দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন।
“এ সময় ধরা পড়লে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে মারপিট করেন। পরে পার্কের মালিক মো. মাহমুদ আরেফিন চৌধুরীও তার ওপর নির্যাতন চালান।”
তিনি আরও বলেন, “এ সময় আমার ছেলেকে গরুর মুত্র, নোংরা পানিসহ ওষুধ মেশানো পানি খাওয়ায়। খবর পেয়ে তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি।”
এ ঘটনায় তিনি নীলফামারী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে নীলফামারী জেনারেল হাসাপাতালের আবসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রহিম বলেন, “হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসার আগে ওই শিক্ষার্থী ঘুমের ওষুধ সেবন করেছিল বলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে জানিয়েছেন। বর্তমানে হাসাপাতলের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। তার শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। সে সুস্থ আছে।”
ওই পার্কের মালিক মো. মাহমুদ আরেফিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে পার্কে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে ‘বাগান বাড়ী’ পার্কে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মাহমুদ আরেফিন চৌধুরী মঙ্গলবার সকাল থেকে পার্কে আসেননি। সকাল থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ আছে।
এ সময় ওই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পার্কের কর্মচারী মো. মিঠু ইসলাম (২৫) বলেন, ঘটনার দিন কয়েকজন বন্ধুসহ ওই ছাত্র পার্কে আসেন। তার অন্যান্য বন্ধুরা টিকিট করে প্রবেশ করলেও তিনি বেড়া টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন।
“এরপর পার্কে আসা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে থাকলে মেয়েরা অভিযোগ করে; তখন পার্কের মালিক প্রথমে তাদের সতর্ক করেন। এতে তারা মালিক কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে এই ছাত্রকে আটক করা হয়। এ সময় তার অন্যান্য বন্ধুরা পালিয়ে যায়। পরে পার্কের মালিক তাকে কয়েকটি চরথাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেন।”
তাকে গো-মুত্র বা অন্য কিছু খাওয়ানোর অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক মো. আব্দুর রউপ বলেন, এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর মা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত চলছে।