পঁচাত্তর ট্রাজেডির পর ১৯৭৯ সালের ১০ মে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত সর্বইউরোপীয়
বাকশালের এক সম্মেলন যোগ দিয়ে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার
চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
ওই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে শেখ হাসিনার প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের
কথা থাকলেও তার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন লন্ডনে অবস্থানরত শেখ রেহানা।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার পাঠানো বাণী পাঠ
করেন শেখ রেহানা। তার পক্ষে বক্তব্যও রাখেন তিনি। সেটাই ছিল কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে
শেখ রেহানার প্রথম বক্তব্য।
দিনটি উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ ‘১০ মে
১৯৭৯: দিক-নির্দেশনাহীন সময়ে আশার আলো’ শীর্ষক
ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে প্রবীণ রাজনীতিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের
সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, “১৯৭৯ সালের ১০ মে স্টকহোমে
অনুষ্ঠিত সর্বইউরোপীয় বাকশালের সম্মেলন যোগ দিয়ে বিদেশের মাটিতে প্রথম কোনো সমাবেশে
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাওয়া হয়েছিল, আর সেটি করেছেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ্য কন্যা শেখ
রেহানা। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে তিনিই সর্বপ্রথম পঁচাত্তরের
কলঙ্কজনক ও অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ রেহানার
আবেগঘন বক্তব্য সে অনুষ্ঠানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।”
আমু বলেন, “আজকে আমাদের মনে প্রশ্ন
থাকে, যদি সেদিন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে না থাকত, তা হলে আমরা কত বছর নির্যাতনের
শিকার হতাম? আমরা এই খুনি চক্রের শিকারে থাকতাম? আজকে শেখ হাসিনা যদি দেশে না আসতেন,
আমরা কত বছর নিগৃহীত থাকতাম, সেটা কেউ বলতে পারবে না।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ওয়েবিনারে
অংশ নিয়ে বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য
বিদেশের মাটিতে যারা সোচ্চার হয়েছিল, তাদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাদের মধ্যে
ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠা কন্যা আমাদের শ্রদ্ধাভাজন শেখ রেহানা।
“যখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়,
তখন আমরা দেশে শেখ রেহানার পরামর্শে নানা কাজ কর্ম করতে সক্ষম হয়েছি এবং এখানে জননেত্রী
শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করার জন্য আইনজীবীদের আনাসহ নানা সহযোগিতা তিনি করেছেন,
এছাড়া শেরি ব্লেয়ারকে তিনি এখানে পাঠিয়েছিলেন। নানাভাবে তিনি সহযোগিতা করেছেন। রেহানা
আপা আমাদের সাহস জুগিয়েছেন।”
শেখ রেহানার চারিত্রিক বৈশিষ্ট তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “তিনি
অত্যন্ত ধীরস্থির, শান্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারেন।”
আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের
(সিআরআই) এর সহযোগিতায় ও সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, যুক্তরাজ্য
আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
মজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।