ক্যাটাগরি

এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ: চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলারও বিচার শুরু

বুধবার দুপুরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন
দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হকের আদালতে পুলিশের দায়ের করা এই মামলার অভিযোগ
গঠন করা হয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রাশিদা সাইদা খানম জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আট আসামির উপস্থিতিতে
মামলার বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন বিচারক। এর আগে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি ধর্ষণ মামলার
অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু হাইকোর্ট আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলা একই আদালতে
বিচার করার আদেশ দেয়। এ কারণে এতদিন ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি।

তবে দুই মামলার একসঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণ কবে
থেকে শুরু হবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক আদেশ দেননি বিচারক।

২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার প্রধান অভিযুক্ত
ছাত্রলীগকর্মী সাইফুরসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

এর মধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের মামলাটির অভিযোগপত্রটি
মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেয় পুলিশ।

অভিযোগপত্রে আট আসামির মধ্যে ছয়জনকে ধর্ষণে
সরাসরি জড়িত আর দুইজনকে তাদের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরা হলেন- প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর
রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে
আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া। তাদের সহযোগী হচ্ছে- রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান
মাসুমকে।

এর আগে ডিএনএ টেস্টেও গ্রেপ্তার আসামিদের
ডিএনএ নমুনার সঙ্গে ঘটনাস্থলের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া যায়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন,
চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলায় অভিযোগ গঠন না হওয়ায় এতদিন ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য নেওয়া
হয়নি। এখন দুটি মামলায় একসঙ্গে সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

এমসি কলেজ ছাত্রবাসে ধর্ষণের অভিযোগে একটি
এবং ধর্ষিতার স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি
মামলা করে।

সিরাজুল ইসলাম জানান, একই ঘটনায় দুটি মামলা
দুই আদালতে পরিচালিত হলে সাক্ষীদের দুই আদালতেই যেতে হবে। এতে নানা অসঙ্গতি দেখা দিবে।
এতে বিচার প্রক্রিয়াও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই দুটি মামলাই একই আদালতে বিচার
করার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। পরে হাইকোর্ট দুটি মামলা একই আদালতে বিচারের
আদেশ দেন।

এ আদেশের পর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন
দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা একসঙ্গে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার
দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে আসা ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে
তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।

এ ঘটনায় পরদিন সকালে নির্যাতিতা গৃহবধূর
স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে একটি
মামলা করেন। মামলায় ছয়জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়।

মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায়
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বহুল আলোচিত এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।

আরও
পড়ুন:


সিলেটে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার
 

এমসি কলেজে ধর্ষণ: আটজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র
 

এমসি কলেজে ধর্ষণ: ২ দারোয়ান বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি গঠন
 

এমসি কলেজে নববধূকে ধর্ষণ: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
 

এমসি কলেজে ধর্ষণ: চারজনের ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিল
 

এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা হয়েছিল: সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
 

এমসি কলেজে ধর্ষণ: ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণ
 

সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণ: জবানবন্দি দিলেন সেই নববধূ