কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) কায়েস খলিল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আমাদের প্রকল্পের প্রস্তুতি নিচ্ছি। মোটামুটি গুছিয়ে নিয়েছি। সহসা কাজ শুরুর ইচ্ছা আছে।”
চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করে চলমান আন্দোলনের মধ্যে বিকল্প স্থান নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনা হয় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে।
পূর্ব রেলের সদর দপ্তর সিআরবির পরিবর্তে হাসপাতালটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় রেলওয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া যক্ষ্মা হাসপাতাল এলাকায় হতে পারে বলেও বৈঠকে মত আসে।
চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিতি ঐতিহ্যবাহী সিআরবিতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ২০২০ সালের ১৮ মার্চ ইউনাইটেড গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে রেলওয়ে।
গত বছরের শুরুতে নির্ধারিত জমির সামনে প্রকল্পের একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়। জুলাই মাসে প্রকল্প এলাকার জমি হাসপাতাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়।
এ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ (পিপিপি)। কার্যনির্বাহী সংস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং বাস্তবায়ন ও পরিচালনা করবে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম হাসপাতাল লিমিটেড।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি বলছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে বা পিপিপি কর্তৃপক্ষ বিকল্প স্থানের বিষয়ে এখনো তাদের কিছু জানায়নি।
কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক কায়েস খলিল বলেন, “বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীন পিপিপি অফিস থেকে জমি পরিবর্তন বা এধরণের কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। তাই এ ব্যাপারে আমরা খুব একটা চিন্তিত না।
“এটা সরকারের প্রকল্প। আমরা শুধু বাস্তবায়ন করছি। যেভাবে সরকারের সাথে চুক্তি হয়েছে সেভাবেই…। ফরমালি আমাদের কিছু নতুন করে জানানো হয়নি।”
৪০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের ১০০ আসনের একটি মেডিকেল কলেজ, ৫০ আসনের একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং দুই ধাপে মোট ৫০০ শয্যার একটি হাসপাতাল হবে। ৫০ বছর পর প্রকল্পের মালিকানা হবে রেলওয়ের।
প্রকল্পের প্রথম ভাগের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জমি খালি আছে জানিয়ে কায়েস খলিল বলেন, “কিছু পরিকল্পনার বিষয় আছে। সেখানে বড় বড় কনস্ট্রাকশন হবে। তাই সাইট প্রিপারেশন ও কিছু পারমিশনের বিষয় আছে।
“কোভিডের জন্য আমরা দেড় বছর কাজ করতে পারিনি। এখন মোটামুটি গুছিয়ে এনেছি। খুব একটা সময় লাগবে না। আশাকরি কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শুরুর করতে পারব।”
প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন প্রয়োজন হবে। সে বিষয়ে তিনি বলেন, “এজন্য আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। অনুমতি চেয়ে আবেদন করব।”
প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক মো. আহসান জাবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংসদীয় কমিটির সভার বিষয়ে আমি কিছু অবগত নই।
“প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বা পিপিপি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত আমাদের এ বিষয়ে কোনো নতুন নির্দেশনা দেয়নি। তাই আগের মতই কাজ চলছে। আমরা ইউনাইটেডকে জমি বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের তরফে এখন কিছু করার নেই।”
সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে সিডিএ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাবির বলেন, “এখনো অনুমতি হয়নি।”
ওই স্থানে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করে ১০ মাস ধরে আন্দোলন চলছে। সংসদীয় কমিটিতে বিকল্প স্থান নিয়ে আলোচনার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছে আন্দোলনকারী নাগরিক সমাজ ও চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন
সিআরবিতে না হলে হাসপাতাল কোথায়? সংসদীয় কমিটিতে বিকল্প নিয়ে আলোচনা
সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প, বিরোধিতা নানা প্রশ্নে
সিআরবির হাসপাতাল প্রকল্প ঘুরে এলেন আওয়ামী লীগ নেতারা