টেকনাফ উপজেলার
সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই দুটি ভবন
যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট
ঘূর্ণিঝড় ‘আসানির’ প্রভাবে বৃদ্ধি পাওয়া পানির তোড়ে দুই-তিনদিন ধরে বিদ্যালয়ের
পাশে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মাটি সরে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বড়
ধরনের ক্ষতি হতে পারে বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর।
১৯৯১ সালে সৃষ্ট
প্রবল শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সারাদেশে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যাওয়ার
পর এই অঞ্চলের মানুষের আশ্রয়ের জন্য ১৯৯৩ সালে সৌদি আর্থিক অনুদানে তিন তলা
সাইক্লোন শেল্টারটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে এই ভবনে প্রথম থেকে
পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে।
বিদ্যালয়ের ভবন
দুটি নদীতে বিলীন হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে হাজারো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন।
বিদ্যালয়
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, “আমাদের এলাকার একটিমাত্র বিদ্যালয়
এটি। তিন কিলোমিটার এলাকজুড়ে আর কোনো বিদ্যালয় নেই। এই বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে
গেলে এতগুলো শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটবে। পড়ালেখা করতে হলে তিন কিলোমিটার
কাঁচা রাস্তা হেঁটে অন্য এলাকার বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়তে হবে।”
শাহপরীর দ্বীপ
জালিয়াপাড়া ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, “আমরা নদীর পাড়ে অনিরাপদে থাকি।
ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ারের পানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমাদের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় হলো
সাইক্লোন শেল্টার। এই এলাকায় বসবাসরত ১০ হাজার মানুষের একমাত্র আশ্রয় কেন্দ্র এবং এক হাজার
শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য একমাত্র ভবন দুইটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
সরকার এই ভবন
রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ না করলে ভবন দুইটি
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন দুটি রক্ষার জন্য
একটি প্রকল্প গৃহীত হয়েছে; যা খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।
কক্সবাজার পানি
উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, শাহ পরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দুটি নদীর গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য সরেজমিনে গিয়ে
একটি নকশা ডিজাইন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের আশপাশের ভাঙনে কিছু বস্তা দিয়ে আপাতত
রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই জিও ব্যাগ দিয়ে বিদ্যালয় দুটি
রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে।