ক্যাটাগরি

আসানির বৃষ্টিতে ক্ষেতেই ডুবছে ঝিনাইদহের কৃষকের স্বপ্ন

ঝিনাইদহের কয়েকটি
উপজেলায় রোববার থেকে বৃষ্টির কারণে এভাবেই জমিতে পাকা বোরো ধান নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টির
সঙ্গে প্রবল বাতাসে পাকা ধানের গাছ মাটিতে পড়ে লেপটে নষ্ট হওয়ারও কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।

এক বিঘা জমিতে বোরো
ধান চাষ করেছেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভবিতপুর গ্রামের চাষি মন্টু মণ্ডল। তিনি জানান,
১০ কাঠা জমির ধান কেটে মাঠে শুকাতে দেন। কিন্তু তিন দিনের বৃষ্টির কারণে সেই ধান এখন
পানিতে ভাসছে। ধান থেকে চারা গজানো শুরু করছে।

জেলায় ধান কাটার
ভরা মৌসুম চলছে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আজগর আলী বলেন,
৫০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধান কাটার পর চাষিরা সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে না এনে মাঠে
বিছিয়ে রাখে। সাধারণত খড় শুকিয়ে গেলে বাড়িতে এনে মাড়াই করে।

“কিন্তু ঘূর্ণিঝড়
আসানির প্রভাবে রোববার থেকে কখনও ভারি, আবার কখনও হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সঙ্গে
বাতাসের কারণে পাকা ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। আবার জমিতে কেটে রাখা ধান পানিতে ভাসছে।”

কৃষি কর্মকর্তা
আজগর বলেন, চলতি মওসুমে ঝিনাইদহে ৮৯ হাজার ১৫০ হেক্টরে বোরো ধানের চাষ হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার
চেয়ে ১০ হাজার হেক্টর বেশি।

অনুকূল আবহাওয়া
থাকায় এবং পোকা-মাকড়ের উপদ্রব না হওয়ায় শুরুতে ভালো ফলনের আশা থাকলেও বৃষ্টির কারণে
কৃষকদের সেই স্বপ্নে ভাটা পড়েছে বলে তার ভাষ্য।

মহেশপুর উপজেলার
ভবনগন গ্রামের নাজমুল আহসান জানান, বৃষ্টির পানি জমে তাদের এলাকায় মাঠে কেটে রাখা ধান
ভাসছে। এতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে আশঙ্কা করেন তিনি।

ঘূর্ণিঝড়ের আভাস
পাওয়ার পরই ঝিনাইদহে পাকা ধান কেটে বাড়িতে আনার পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করা হয়েছিল বলে
জানান কৃষি কর্মকর্তা আজগর।

তিনি বলেন, “অনেক
চাষি গ্রাহ্য করেন না। অনেক জায়গায় কাটা ধান পানিতে ভাসছে। শীষ থেকে এসব ধান ঝরে পড়বে।
তা ছাড়া বেশি দিন পানিতে থাকলে চারা গজাবে।”

রোদ উঠলেই ধান দ্রুত
কেটে বাড়িতে আনার পরামর্শ দেন তিনি।

বঙ্গোপসাগরের এই
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশে আরও অন্তত দুদিন (শুক্রবার পর্যন্ত) বৃষ্টির প্রবণতা
থাকতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বলেছেন, “দেশের
সর্বত্র বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। ১৪ মে থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।”

বৃহস্পতিবার রংপুর,
রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়
দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির আভাস দেওয়া হয়েছে।