নেত্রকোণা
জেলার মদন থানার নায়েকপুর ইউনিয়নের মাখনা এলাকায় গত ৫ মে কাস্তে দিয়ে খাইরুল মিয়া (২৯) নামের ওই শ্রমিকের গলা
কেটে হত্যা করা হয় বলে জানায় সিআইডি।
ওই ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের এলআইসি শাখার
একটি দল বুধবার রাতে গাজীপুরের গাছা থানার শরীফপুর
এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।
এরা হলেন- শফিকুল ইসলাম (২৩) এবং তার ভাই মো. মোস্তাকিন
ইসলাম (২০)। তাদের মধ্যে শফিকুল এই মামলার প্রধান আসামি।
গত ৬ মে খাইরুলের বড় ভাই ঈদু আমীন নেত্রকোণার মদন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
সিআইডির
এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সংবাদ
সম্মেলনে বলেন, “গ্রেপ্তার দুজন হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।”
মুক্তা
ধর বলেন, গ্রেপ্তার শফিকুল ও মোস্তাকিনের ভগ্নীপতি হক
মিয়া একই এলাকার এখলাছ মিয়ার কাছ থেকে গতবছর ৪০ শতাংশ জমি কিনে আবাদ করে। এখলাছ মিয়ার ভাই এলাই মিয়া সেই জমির অর্ধেক
অংশের মালিকানা দাবি করে হক মিয়াকে ধান কাটতে নিষেধ করেন। কিন্তু সেই নিষেধ না মেনে হক মিয়া তার লোকজনসহ খাইরুল মিয়াকে ধান
কেটে দিতে বলেন।
“জমিটি বিরোধপূর্ণ হওয়ায়
সেখানে ধান কাটতে গেলে ঝামেলার আশঙ্কায় খাইরুল মিয়া প্রথমে ধান কাটতে চাননি। ধান কেটে না দিলে হক মিয়া ও তার লোকজন খাইরুলকে ‘দেখে নেবে’ বলেও হুমকি দেয়।”
সংবাদ
সম্মেলনে জানানো হয়, ৫ মে সকাল সাড়ে ৬টায় মাখনা সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের কাছে গরুর খাওয়ার জন্য কাস্তে দিয়ে ঘাস কাটছিলেন খাইরুল। সে
সময় গ্রেপ্তার দুই ভাই শফিকুল এবং মোস্তাকিনসহ আরও কয়েকজন লোহার রড, বাঁশের
লাঠি নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, ধান না কেটে
খাইরুল তার গরুর জন্য ঘাস কাটছেন। তখন তারা মারধর শুরু করেন।
মুক্তা
ধর বলেন, “খাইরুল মিয়ার হাতের ঘাস কাটার
কাস্তে ছিনিয়ে নিয়ে শফিকুল ইসলাম তার গলায় আঘাত করেন। রগ
কেটে গুরুতর আহত হয়ে খাইরুল মিয়া মাটিতে পড়ে যান। তখন
অন্যরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য
এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।”
এরপর
চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে গুরুতর জখম হওয়া কৃষক খাইরুলকে মদন
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।