তবে ‘জ্যাক অব অল ট্রেডস’ হলেও তিনি যে বোলিংয়ের ‘মাস্টার’ সেটি ফুটে উঠল তার কথায়। গতি, বাউন্সি আর আগ্রাসনে প্রায় এক যুগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রাঙিয়েছেন তিনি। একসময় ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ভীতি জাগানিয়া বোলারদের একজন। কিন্তু বাংলাদেশ তার কাছে ছিল একরকম অচেনা ভুবন। এদেশে কখনও খেলা হয়নি তার। বাংলাদেশের উইকেটে খুব বেশি খেলা দেখার অভিজ্ঞতাও তার থাকার কথা নয়। তবে এই উইকেটে পেসারদের সাফল্যের ছক তিনি ঠিকই এঁকে নিয়েছেন দ্রুত।
বাংলাদেশের সবশেষ দুটি টেস্ট সিরিজ ছিল নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে। সহায়ক কন্ডিশনে পেসাররা যথেষ্টই মেলে ধরেছেন নিজেদের। এবার সিরিজ দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। খেলা নিজ দেশে হলেও কন্ডিশন ও উইকেট তো এখানে পেসারদের জন্য প্রতিকূল!
মে মাসের তীব্র গরম প্রাণশক্তি শুষে নিতে পারে নিমিষেই। প্রাণহীন উইকেটে মাথা কুটে মরতে হতে পারে পেসারদের। হতাশাও তাই পেয়ে বসতে পারে দ্রুত।
তবে চট্টগ্রামে তিন দিনের অনুশীলনেই পেসারদের করণীয় বুঝে নিয়েছেন ডোনাল্ড। প্রথম দুই দিনে অনুশীলনে তিনি জোর দিয়েছিলেন নতুন বলের কার্যকারিতা বের করতে, বৃহস্পতিবার পেসারদের নিয়ে কাজ করেছেন পুরনো বলে সফল হতে। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বোলিং কোচ তুলে ধরেছেন তার পরিকল্পনা।
“বাংলাদেশে কখনও খেলা হয়নি আমার। তবে এই ধরনের পিচে, পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এখানে আরও বেশি স্টাম্প সোজা বল করতে হবে। নতুন বল এখানে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। গত দুই দিনের অনুশীলনে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি এটা বোঝাতে যে, নতুন বল কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ‘হট জোন’ খুব দ্রুত খুঁজে নিতে হবে আমাদের এবং সেখানে লম্বা সময় বল রাখতে হবে। চমক জাগানিয়া কোনো ডেলিভারির পথে না ছুটে, ইনসুইং-আউট সুইং নয়, বরং প্রক্রিয়ায় অটল থাকা।”
“এখানে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হতে যাচ্ছে পুরনো বলের বোলিং। আজকের অনুশীলনের পুরোটাই ছিল পুরনো বলের। অনেক বেশি মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি বল রিভার্স করানোয়, পুরনো বলে অনেক ধৈর্য ধরা ও সৃষ্টিশীল হওয়ার দিকে। এই ছেলেদেরকে নিশ্চয়ই আমার বলে দিতে হবে না ওদের কন্ডিশনে কীভাবে বল করতে হবে। ওরা জানে এখানে কেমন হবে, কী করতে হবে। তবে সব মিলিয়ে ধৈর্য ও অধ্যাবসায় কতটা রাখতে পারি, সৃষ্টিশীলতা কতটা বয়ে আনতে পারি, এটার পরীক্ষা হবে।”
নতুন বলের সম্ভাব্য লেংথও বাতলে দিলেন ডোনাল্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০২ উইকেট শিকারি বোলারের মতে, নতুন বলে শুরুটা ভালোভাবে করে প্রক্রিয়া ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
“এই সপ্তাহে যেটা বুঝতে পারলাম, এখানে লেংথ একটু ফুলার থাকতে হবে নতুন বলে। নতুন বলকে দারুণ গুরুত্ব দিতে হবে এবং প্রথম ৩০ ওভারেই সেরাটা আদায় করে নিতে হবে। শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে ৪০ রানের মতো অবস্থায় নিতে হবে।”
“আরেকটা ব্যাপার হলো, বল দেখভাল করা। প্রচুর ঘাম ঝরে এখানে, অনেক আর্দ্রতা। ৩০ ওভারের পর প্রক্রিয়া ধরে রাখা। কতটা শৃঙ্খলা আমরা ও ধৈর্য আমরা রাখতে পারছি। চাপটা ধরে রাখা। বল আরও পুরনো হলে রিভার্স সুইংয়ের ব্যাপার চলে আসে। প্রতিটি ধাপ ধরে এগোতে হবে আমাদের। অবশ্যই পরীক্ষা হবে এখানে। শৃঙ্খলা, মানসিকতা ও সৃষ্টিশীলতা হবে বড় ব্যাপার।”