ঢাকার বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের
ব্যবধানে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫
টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
রসুনের দাম প্রতি কেজিতে
১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া দেশি ও আমদানি করা আদায় কেজিতে ১০ টাকা, আলুতে
৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগিতে অন্তত ১০ এবং খামারের মুরগির ডিম প্রতি ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা
বেড়েছে।
শুক্রবার মালিবাগ, মগবাজার,
সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার খুচরা বাজারে এই চিত্র দেখা যায়।
এসব বাজারে প্রতি কেজি
পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
আমদানি করা রসুন প্রতি
কেজি ১৪০ টাকা ও দেশি রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা জানান, গত
সপ্তাহে দেশি রসুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
আলুর দামও হঠাৎ করে কেজিতে
৫ টাকা বেড়ে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে আলুর দাম ছিল ২০ টাকার মধ্যে।
শান্তিনগরের বাসিন্দা আবু
বকর সিদ্দীক বলেন, “ঈদে পরিবারের সবাই গ্রামে গিয়েছিলাম, ঢাকা ফিরে আজ
বাজার-সদাই কিনেছি, বাজারে গিয়ে দেখি প্রায় সব জিনিসের দামই চড়া। আলু, পেঁয়াজ, রসুন,
আদা, তেল সবকিছুর দাম বেড়েছে।
“এভাবে হুটহাট করে সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া মোটেই
স্বাভাবিক ব্যাপার না। ২০/২২ বছর আগেও এভাবে হুট করে বাজারে জিনিসপত্রের দাম এত বেশি
বেড়ে যাওয়ার মত নজির দেখিনি।”
তিনি বলেন, “কেন সবকিছু অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়বে তার কারণ উদঘাটন করা উচিত। এ অবস্থার
জন্য সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে।”
মালিবাগ বাজারের গাজী স্টোরের
দোকানি মো. রুবেল বলেন, “গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দর
বেড়ে যায়। তার আগে পাইকারি দরে যে পেঁয়াজ কেনা ছিল ২২/২৫ টাকা তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ থেকে
৪০ টাকা।”
একইভাবে পাইকারি বাজারে
রসুন, আদা এবং আলুর দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।
আমদানি ঘাটতির কারণে পেঁয়াজ-রসুন
ও আদার দাম বেড়েছে বলে জানান ঢাকার পেঁয়াজ-রসুন, আদাসহ নিত্যপণ্যের বড় পাইকারি বাজার
শ্যামবাজারের আড়ৎদার আব্দুল কুদ্দুস।
তিনি বলেন, “আমাদের এখানে পেঁয়াজ এখন ৩১ থেকে ৩৩ টাকা দরে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে
ছিল ২০ থেকে ২১ টাকার মধ্যে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।”
এছাড়া রসুনের পাইকারি দর
৫৫ থেকে ৮০ টাকা এবং আদার কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা বলে জানান এই পাইকারি ব্যবসায়ী।
রামপুরা কাঁচা বাজারের
তাহের স্টোরের মালিক আবু তাহের জানান, “পেঁয়াজ, আদা, আলু প্রতি বস্তার মধ্যে বেশ কিছু নষ্ট
থাকে, যেগুলো ফেলে দিতে হয়।
“নষ্টগুলো বাদ দিয়ে সেই হিসাবে পেঁয়াজ কেনা পড়ে ৪১
থেকে ৪২ টাকা, বিক্রি ৪৫ টাকা। একইভাবে আলু কেনা পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা, বিক্রি করতে
হচ্ছে ২৫ টাকা।”
ডিমের দাম বেড়ে প্রতি ডজন
বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। গত সপ্তাহের শুরুতে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা থাকলেও সপ্তাহ শেষে ১২০
টাকায় বিক্রি হয়। তবে শুক্রবার ডজনে পাঁচ টাকা কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজিতে
১০ টাকা বেড়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। তবে
সোনালী মুরগি আগের মতো ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিনগর বাজারের ভাই
ভাই ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, “ঈদের পর
ঢাকায় লোকজন ফিরতে শুরু করার মধ্যে মুরগির দাম বেড়েছে, ব্রয়লার কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
বিক্রি একটু বেড়েছে, এ কারণে দামও বেড়েছে।”
একই বাজারের ডিম ব্যবসায়ী
সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঈদে অনেকেই গ্রামে ছিল, ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরে লোকজন
বাজার-সদাই করতে এসে প্রথমে ডিম কিনে নেয়, এজন্য চাহিদা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে।”
তবে কাপ্তানবাজারের শাহিনুর
হেনস হাউজের মালিক ওমর ফারুক বলেন, “ঈদের পর খামার থেকে সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে, খুচরা
ব্যবসায়ীদের অর্ডারের পরিমাণও বেড়েছে, যে কারণে মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।”
গত কয়েকদিন বাজারে বোতলজাত
সয়াবিন তেল অনেকটা শূণ্য থাকলেও শুক্রবার খুচরা দোকানগুলোতে নতুন দামে বোতলজাত সয়াবিন
তেল পাওয়া যাচ্ছে। পাঁচ লিটারের দাম রাখা হচ্ছে ৯৮৫ টাকা।