এই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার
সন্ধ্যায় সভা করে উপজেলা পরিষদ তিন দিনের মধ্যে এসব ধান কেটে তোলার উদ্যোগ নিতে
কৃষি বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে।
ভারতের মেঘালয়ে ভারি
বর্ষণে সুরমা, সীমান্ত নদী যাদুকাটাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া গত তিন দিনে সুনামগঞ্জে ২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন
বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা বলেন, সুনামগঞ্জে এখন প্রাক বর্ষা চলছে।
প্রাকবর্ষায় সুরমা নদীর পানি ৬.০৫ মিলিমিটার অতিক্রম করলে বিপৎসীমা অতিক্রম ধরা হয়।
১৫ মে পর্যন্ত প্রাকবর্ষা থাকবে। এরপর ৭.৮০ মিটার অতিক্রম করলে বিপৎসীমা ধরা হয়। গত
তিন দিনের বৃষ্টিতে প্রাকবর্ষার বিপৎসীমা অতিক্রম করে সুরমা নদীর পানি শুক্রবার সন্ধ্যা
৬টায় ৭.৩২ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়।
তিনি জানান, এছাড়া
সীমান্তনদী যাদুকাটার পানি একই সময়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ৮.০০ মিটার
উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। প্রাকবর্ষায় যাদুকাটার বিপৎসীমা ৫.৯৫ মিটার এবং বর্ষায় ৮.০৭ মিটার
ধরা হয়।
সীমান্তের পাটলাই নদীতেও
পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।
গত তিনদিনে সুনামগঞ্জে
২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, এতে নদ নদীতে
পানি বেড়েই চলেছে।
এদিকে, পাহাড়ি ঢল ও
ভারি বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার গজারিয়া রাবার ড্যাম দিয়ে খরচার
হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এতে খরচার হাওরের বিএডিসির বিভিন্ন প্রকল্পে আবাদ করা ৩০ হেক্টর
জমির ইরি বোরো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
রাবার ড্যাম দিয়ে খরচার
হাওরে পানি প্রবেশ করায় শুক্রবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ জরুরি সভা করেছে।
সন্ধ্যায় এই সভায় আশপাশের
প্রায় আড়াইশ ঘরবাড়ি বাঁচাতে রাবার ড্যাম উঁচু না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাবার ড্যাম
ফুলিয়ে উঁচু করে পানি আটকানো হলে পানির প্রবল চাপে পার্শবর্তী সোনাপুর, চালবন্দ ও ভাদেরটেকের
প্রায় ২৫০টি ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় রাবার ড্যামের পানি না আটকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে
উপজেলা প্রশাসন।
তবে উপজেলা কৃষি অফিসকে
তিনদিনের মধ্যে খরচার হাওরের ৩০ হেক্টর জমির ধান কেটে তোলার উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিদ আল জাদিদ বলেন, “গজারিয়া রাবার ড্যাম ফুলিয়ে পানি আটকানো
যেত। কিন্তু প্রায় আড়াইশ বাড়িঘর রক্ষার জন্য আমরা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে পানি না আটকানোর
সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এ কারণে যে ৩০ হেক্টর
জমির বোরো ধান (ইরিধান) রয়েছে তা আগামী তিনদিনের মধ্যে কেটে তোলার জন্য কৃষি বিভাগকে
উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ স্থানীয়
সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, এলজিইডি নির্মিত রাবার
ড্যাম দিয়ে হঠাৎ পাহাড়ি ঢলের পানি খরচার হাওরে প্রবেশ করছে।
“আমরা পানি আটকানোর
চেষ্টা করেছিলাম। সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ সভা করে পানি না আটকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তারা জানিয়েছে পাহাড়ি ঢল আটকালে আশপাশের প্রায় আড়াইশ ঘরবাড়ি পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত
হবে।”