শুক্রবার ভোরে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া শাখা তার আবক্ষ ফুল দিয়ে মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান।
কবির জন্ম ভারতে হলেও পূর্বপুরুষের নিবাস ছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে। সুকান্তের বাবা নিবারণ ভট্টাচার্য্য সাতচল্লিশের দেশভাগের অনেক আগে কলকাতায় পাড়ি জমান। বাংলা সাহিত্যে তিনি কিশোর কবি হিসেবে পরিচিত।
১৯২৬ সালের ১৫ অগাস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ক্ষণজন্মা এই পুরুষ। কলকাতার যাদবপুরে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।
কবিকে স্মরণ করে তার পৈত্রিক ভিটায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক রতন সেন কংকন বলেন, “আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে শুক্রবার ভোরে কবি সুকান্তের পৈত্রিক ভিটায় নির্মিত কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে।”
কবির স্মৃতিকে ধরে রাখতে প্রতি বছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে একটি স্মৃতিমেলার আয়োজন করা হলেও বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয় না। এ বিষয়ে স্থানীয় ও সুকান্তপ্রেমীদের মধ্যে রয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ।
কবি সুকান্ত স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার বলেন, আগামী প্রজন্মের কাছে কবি সুকান্তকে তুলে ধরতে হলে সরকারি ও বেসরকারিভাবে জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা জরুরি। বাৎসরিক একটি মেলা করে বাঙালি জাতির কাছে সুকান্তকে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
ছাড়পত্র, ঘুম নেই, পূর্বাভাস, অভিযান, হরতাল কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।
সুকান্তের বাবা নিবারণ ভট্রাচার্য্য এবং মা সুনীতি দেবী। কলকাতা কলেজ স্ট্রিটে নিবারণ ভট্টাচার্য্যের একটি বইয়ের দোকান ছিল।
কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করায় কবির পূর্বপুরুষের ভিটাটিও বেদখল হয়ে ছিল অনেক বছর। প্রায় ৫৯ বছর বেদখলে থাকার পর ২০০৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কবির বাড়িটি দখলমুক্ত করে সেই ভিটায় একটি অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি স্থাপন করে গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদ।