দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে শুক্রবার সকালে চিরবিদায় নেন একাত্তরের রণাঙ্গনের এ বীর সেনানী।
তার ছোট ছেলে ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক আশিকুন্নবী চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকাল সোয়া ৬টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তার বাবা। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ক্যান্সার আক্রান্ত নুরুন্নবী আরও বেশ কিছু শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে চিকিৎসাও নিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে নগরীর পূর্ব মাদারবাড়ি নছু মালুম মসজিদে জানাজা শেষে নুরুন্নবী চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া নিজকুঞ্জোরা গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হবে।
নুরুন্নবী চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বিজয়ের খবরে গুলি ছুড়ে উল্লাস করেছিলাম: নুরুন্নবী চৌধুরী
স্কুলজীবনেই ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন নুরুন্নবী চৌধুরী। ১৯৬৬-৬৭ সালের চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আর যুদ্ধকালীন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেলা প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন নুরুন্নবী।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মিরসরাইয়ের শুভপুর ব্রিজে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে যে ক’জন যুবক পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে গিয়েছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন নুরুন্নবী।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নিহত হওয়ার পর রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নুরুন্নবী। বাকি জীবনে কোনো সভাসমাবেশেও আর যোগ দেননি।
২০১৭ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “যে জাতির স্বাধীনতার জন্য কাজ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, তাকে খুন হতে হয়েছে নিজের স্বাধীন দেশে। ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু ও মনির মৃত্যুর পর নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়েছে। তাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি।
“সেজন্য রাজনৈতিক মঞ্চে গিয়ে আর বাহাদুরি করতে ইচ্ছে হয়নি। নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছি রাজনীতি থেকে।”