শুক্রবার রুশ সেনাদের এই নদী পার ঠেকিয়ে দেওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউক্রেইন। তাতে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার একটি নৌযানে আগুন জ্বলতেও দেখা গেছে।
একমাসেরও বেশি সময় আগে রুশ সেনারা ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ এবং উত্তর-পূর্ব থেকে সরে যাওয়ার পর দ্রুত অগ্রসর হওয়া দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ থেকেও তাদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী।
ইউক্রেইন এখন খারকিভের পূর্বে সিভারস্কি ডনেট নদী তীরের প্রায় ৪০ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন রয়টার্সের সাংবাদিকরা। রুশ সেনাদের তুমুল বোমাবর্ষণের শিকার হওয়া এই নগরীটি অন্তত গত দু’সপ্তাহ ধরে শান্ত রয়েছে। তবে খারকিভের উত্তরে লড়াই চলছে।
খারকিভের ১০ কিলোমিটার উত্তরের দারগাছি এলাকায় বিধ্বস্ত ‘হাউস অব কালচার’ ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে দমকলকর্মীরা। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, রাতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ভবনটিতে আঘাত হেনেছে। এই ভবন থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হত। বৃহস্পতিবার আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ভবনটিতে আঘাত হেনেছিল। এতে একটি ক্লিনিকের এক কর্মী আহত এবং একটি বাড়ির বাসিন্দারা নিহত হয়।
তবে রুশ বাহিনী বেসামরিক লোকজনদের হামলার নিশানা করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা খারকিভ অঞ্চলে ইউক্রেইনের এসইউ-২৭ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা এবং মধ্য ইউক্রেইনে ক্রেমেনচুক তেল শোধনাগার অচল করে দেওয়ার দাবি করেছে। তবে এই খবর তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ব্রিটেন জানিয়েছে, খারকিভের দক্ষিণ-পূর্বে সেভেরোদনেস্ক শহরের পশ্চিমে সিভেরস্কি ডনেট নদী পার হওয়ার রুশ সেনাদের চেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়েছে ইউক্রেইনীয় সেনাবাহিনী। ইউক্রেইনের বিমানবাহিনীর প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি সামরিক যান আগুনে পুড়ে গেছে এবং একটি সেতু আংশিকভাবে নদীতে ডুবে গেছে। আশেপাশে পরিত্যক্ত ট্যাংক ও সামরিক যানও দেখা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ইউক্রেইনের এ দাবির সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি। কবে ও কখন এ লড়াই হয়েছে তাও তাদের পক্ষ থেকে জানানো সম্ভব হয়নি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেভেরোদনেস্ক ও ইজিউমের আশেপাশে রাশিয়া ব্যাপক সামরিক সমাবেশ করছে। তারা চেষ্টা করছে স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোর্স্কের দিকে অগ্রসর হয়ে দনবাস দখল করতে।
ইউক্রেইনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু করা আগ্রাসনকে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছে। তাদের দাবি, রাশিয়ার নিরাপত্তায় হুমকি হওয়ার কারণে ইউক্রেইনকে সামরিকভাবে নিরস্ত্র করতে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। ওদিকে, ইউক্রেইনসহ পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, রাশিয়া মিথ্যা অজুহাত খাড়া করে আগ্রাসী যুদ্ধ চালাচ্ছে।