ক্যাটাগরি

সাকিবকে খেলাতে চান কোচ, তবে…

সাকিবের কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবরে বাংলাদেশ দলে বড় ধাক্কা লাগে গত মঙ্গলবার। তবে দু দিন পরই তিনি আবার নেগেটিভ হন। বৃহস্পতিবার শুরুতে র‌্যাপিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়ার পর পিসিআর পরীক্ষা করান তিনি। নেগেটিভ হন দুবারই। আরও একবার নিশ্চিত হতে বিসিবি অনুমোদিত ল্যাবে তার পরীক্ষা করানো হয় আরেক দফায়। এটিতেও তিনি নেগেটিভ হওয়ার রিপোর্ট পান শুক্রবার সকালে।

শুক্রবার সন্ধ্যার ফ্লাইটেই তার চট্টগ্রামে আসার কথা। টেস্টের আগে অনুশীলনের জন্য শনিবার সময় আছে। সাকিবের খেলার সম্ভাবনা তাই যথেষ্টই থাকার কথা। তবে দুপুরে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে কোচ ডমিঙ্গো বললেন, ব্যাপারটি এতটা জলবৎ তরলং নয়।

“তার ফিটনেস ও শারীরিক অবস্থা পরখ করে দেখতে হবে আমাদের। মাত্রই কোভিড থেকে সেরে উঠল। খুব বেশি ক্রিকেট সে খেলেনি। অবশ্যই সে আমাদের জন্য বড় খেলোয়াড়, দলকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। তবে কালকে তার অবস্থা দেখতে হবে। গত দুই-তিন সপ্তাহে সে ব্যাটিং বা বোলিং কিছু করেনি। হুট করে এসে সরাসরি টেস্ট খেলতে নেমে যাওয়া কঠিন। ৫ দিনের খেলা, প্রচণ্ড গরমও এখন। অনেক কিছুই তাই বিবেচনায় নিতে হবে। কালকে তার অবস্থা পরখ করব আমরা।”

ছোটখাটো চোট সমস্যা নিয়ে ম্যাচ খেলতে নেমে যাওয়ার ঘটনা ক্রিকেটারদের আছে অসংখ্য। তবে কোভিডের সঙ্গে ক্রিকেটীয় চোট বা অন্য কোনো অসুস্থতা মেলাতে চান না ডমিঙ্গো। অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিবকে ব্যাটে-বলে ভার বইতে হয় অনেক। সবকিছুই বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানালেন কোচ।

“এটা খুবই ‘ট্রিকি’ (পুরো ফিট না থাকলেও খেলানো হবে কিনা)। টেস্ট ক্রিকেট কঠিন খেলা। খেলা এবং অনুশীলনের মধ্যে না থেকে হুট করে এসে খেলা আরও কঠিন। তার ওপর, সবে কোভিড থেকে সেরে উঠল। আমারও কোভিড হয়েছিল এবং বাজেভাবে ভুগতে হয়েছে। শরীরে শক্তি পাওয়া যায় না। এটা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে ম্যাচ নয়, এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা মাঠে থাকতে হয় এবং ৫ দিন ধরেই চলতে থাকে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে।”

“অবশ্যই আমরা তাকে পেতে চাই। খেলাটির সর্বকালের সেরাদের একজন সে। কিন্তু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, পারফর্ম করার সেরা সুযোগ যেন সে নিজেকে দিতে পারে। যে ভূমিকায় আমরা তাকে চাই, সেই ভূমিকা যেন পালন করতে পারে। দিনে অন্তত ১৫ ওভার বোলিং করা, শীর্ষ ছয় বা সাতে ব্যাটিংয়ে নেমে তিন-চার ঘণ্টা ব্যাটিং করা। এসব খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছি আমি, সুস্থ হয়েই সরাসরি মাঠে নেমে যাওয়া কঠিন।”

৫০-৬০ বা ৭০ ভাগ ফিট থাকলে সাকিবকে খেলানো হবে না, নিশ্চিত করে দিলেন বাংলাদেশ কোচ। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তখন এমন একজনকে একাদশে রাখা হবে, যিনি বোলিংয়ে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারবেন দলকে।

“বোলিং করতে পারে এমন কাউকে আমাদের বিবেচনা করতে হবে (সাকিব না খেললে)। আমাদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জিং। ইয়াসির রাব্বি যেমন দারুণ কয়েকটি দারুণ ইনিংস খেলেছে। কিন্তু আমাদের এমন কাউকে প্রয়োজন যে কিনা ১৫-২০ ওভার বোলিং করতে পারে। মুমিনুলের ১০-১৫ ওভার বোলিং করার আত্মবিশ্বাস আছে কিনা, নিশ্চিত নই। শান্তও বোলিং করছে, কিন্তু দিনে ৬-৭ ওভার করার মতো নয়।” 

“৬-৭ নম্বরে ব্যাটিং এবং ১০-১৫ ওভার বোলিং করতে পারে, এমন কাউকে আমরা বছর দুয়েক ধরেই খুঁজছি। এরকম কেউ যে দলে আছে, তারা খুব ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিপক্ষকে অলআউট করার জন্য। আমরা এখনও এমন কাউকে খুঁজছি, সাকিব না থাকলে যে কাজটি করতে পারবে। সাকিব থাকলে কাজটা সহজ। কিন্তু সাকিবকে খুব বেশি সময় পাওয়া যায় না।”

সাকিব বা মেহেদী হাসান মিরাজের মতো বিশেষজ্ঞ বোলার না হলেও মোসাদ্দেক হোসেনের বলের হাত খারপ নয়। সাদা বলের মতো অতটা কার্যকর তিনি নন লাল বলে। তবে ১০-১২ ওভার হাত ঘোরাতে পারেন নিশ্চিতভাবেই, একটা প্রান্তে আঁটসাঁট বোলিংও করতে পারেন।

ডমিঙ্গো জানালেন, সাকিব খেলতে না পারলে একাদশের বিবেচনায় প্রবলভাবেই রাখা হবে মোসাদ্দেক হোসেনকে।

“সে অবশ্যই আমাদের ভাবনায় আছে। বোলিংয়ে সে দলকে কিছু দিতে পারে। সাকিব খেলতে না পারলে মোসাদ্দেক খেলার জন্য ভালোভাবেই বিবেচনায় আছে।”