শনিবার দুপুরে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিম উদ্দিন গাজী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনও তাদের এ দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।
আজিম বলেন, “বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর হওয়া সত্ত্বেও এখানে ভারি পণ্য উঠা-নামার জন্য পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফর্কলিফট (বন্দরের ভিতরে পণ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনের জন্য চার চাকার ছোট গাড়ি বিশেষ) নেই। যেগুলো আছে তার মধ্যে কয়েকটা পণ্য খালাস করতে গিয়ে বার বার নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া ক্রেন ও ফর্কলিফট চালকরাও অদক্ষ।
“এতে বন্দরে আমদানি করা ভারী পণ্য খালাস করতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যাচ্ছে। এসব কারণে ব্যবসায়ীরাও এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে আমরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছি।”
এ সমস্যা সমাধানের জন্য গত ২৮ এপ্রিল বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক বরাবর চিঠি দেওয়া হলেও তিনি আমলে নেননি বলে অভিযোগ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিকের।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, “বন্দরে প্রায় সবগুলো ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো হয়ে গেছে। যে ক্রেন ও ফর্কলিফট একটু ভালো আছে সেগুলোও বার বার নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না। তাই বাধ্য হয়েই এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।”
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, “সময়মতো আমদানি পণ্য আনলোড করতে না পারায় ভারতীয় ট্রাক দিনের পর দিন বেনাপোল বন্দরে আটকে থাকে। বেনাপোল বন্দরে জায়গা না থাকায় প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় সাত হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে এক মাস ধরে ভারতের বনগাঁ কালিতলা পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর জন্য ট্রাকপ্রতি প্রতিদিন তিন হাজার রুপি লোকসান গুণতে হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘এস সরদারের’ প্রতিনিধি নয়ন হোসেন বলেন, গত ২৫ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত তার ৭০ ট্রাক পণ্য আমদানি হলেও ক্রেন অকেজো থাকায় খালাস হয়েছে মাত্র তিন ট্রাক। এর ফলে তাদের প্রতিদিন বাড়তি ট্রাক ভাড়া দিতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দরে ক্রেন ও ফর্কলিফট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘ব্লাক বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের’ ব্যবস্থাপক মিল্টন খন্দকার বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমানে অধিক পরিমাণে পিডিবির (বিদ্যুৎ টাওয়ারের) মালামাল আমদানি হচ্ছে। ওইসব মালামাল ওঠাতে-নামাতে গিয়ে বেশ কিছু ক্রেন ও ফর্কলিফটের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। যে কারণে অন্যান্য পণ্য উঠা-নামায় সমস্যা হচ্ছে।
তার দাবি, এ বন্দরে তাদের ছয়টি ক্রেনের মধ্যে তিনটি এবং ১০টি ফর্কলিফটের মধ্যে আটটি সচল আছে। খুব দ্রুত আরও দুটি ক্রেন আনা হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, নতুন ক্রেন ও ফর্কলিফট কিনতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।