রোববার দুপুরে সিলেট সদর
খাদ্যগুদাম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারত সরকারিভাবে
গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। বেসরকারিভাবে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে তারা
রপ্তানি বন্ধ করলেও তাতে বাংলাদেশের উপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর
পর বাংলাদেশে গম আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছিল ভারত। দাবাদাহে উৎপাদন হ্রাস ও
মূল্য বৃদ্ধির কারণে আকস্মিকভাবে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম
কমানোর লক্ষ্যে শনিবার থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
বিশ্বে গম
রপ্তানিতে ভারত দ্বিতীয় বৃহৎ রাষ্ট্র। বিশ্বে গম রপ্তানিকারক শীর্ষ দেশগুলোর দুটি
ইউক্রেইন ও রাশিয়া এখন যুদ্ধে রয়েছে, যারা বিশ্ববাজারে এক-তৃতীয়াংশ গমের জোগান
দেয়।
তবে
এ ব্যাপারে ভারতের সরকার বলছে, যেসব রপ্তানি আদেশ আগেই হয়েছে, সেসব দেশ গম পাবে। যেসব
দেশ খাদ্য নিরাপত্তায় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচেছ, তাদের ক্ষেত্রেও রপ্তানির অনুমতি
তারা দেবে।
আমাদের উৎপাদিত ধানে চালের
চাহিদা মিটলেও গম আমদানি করতে হয় বলে মন্ত্রী জানান।
“গত
এক বছর থেকে আমরা বিদেশ থেকে কোনো চাল আমদানি করিনি। আমাদের কৃষকদের উৎপাদিত ধান দিয়েই চালের চাহিদা
মিটছে। তবে গম আমাদের দেশে হয় না, বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গম আমদানি করা হতো
ইউক্রেইন ও রাশিয়া থেকে। কিন্তু এ দুই দেশের যুদ্ধের সময়ে আমরা সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী
দেশ ভারত থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করেছি। পরবর্তীতে যা দরকার তাও ভারত
থেকে আমদানি করা হবে।”
দাবদাহে উৎপাদন হ্রাস ও চড়া দাম: গম রপ্তানি বন্ধ করল ভারত
ইউক্রেইন যুদ্ধ: বিশ্বের খাদ্যভাণ্ডার হয়ে উঠতে পারবে ভারত?
বোরো ফসলের আবাদ থেকে ধান-চালের ভালো মজুদের
প্রত্যাশা করে দেশে কোনোভাবেই খাদ্য সংকট হবে বলেও মন্ত্রী মনে করেন।
তিনি জানান, সুনামগঞ্জে
সম্প্রতি বোরো ফসলের কিছু ক্ষয়-ক্ষতি হলেও চাষাবাদ হয়েছে অনেক বেশি। এ থেকে
ধান-চালের শক্তিশালী একটি মজুদ গড়ে উঠবে। এছাড়াও গত আউশ ও আমন ধানেরও প্রচুর মজুদ
রয়েছে এবং বৃষ্টির কারণে আগামী আউশ ফসলও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই দেশে
কোনোভাবেই খাদ্য সংকট তৈরি হবে না।
সিলেটে ধান চাল সংরক্ষণের জন্য ২৫ হাজার মেট্রিক
টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সাইলো নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
সরকার পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি
ভবিষ্যতে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না বলেও জানান।
কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনায় সরকারি দামের বিষয়ে
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের সাহয্য করে এবং তাদের
কাছ থেকে ঘোষণা দিয়ে দাম নির্ধারণ করে ধান কেনে। কৃষকরা যাতে বাজারে অন্যের কাছে
ধান বিক্রি করে না ঠকে তাই এমনটি করা হয়। এবার ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা
আর বাড়ানো হবে না।
দুপুরে মন্ত্রী বিমানে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন। সেখান থেকে সিলেট সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন
শেষে সিলেট সার্কিট হাউসে কিছু সময় অবস্থান করে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করেন।