ক্যাটাগরি

‘ভয়ঙ্কর’ কাদিসে পারল না রিয়াল

শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে আগেই। সামনেই মৌসুমের সবচেয়ে বড় ম্যাচ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। লিভারপুলের বিপক্ষে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের আগে খেলোয়াড়দের যথেষ্ট বিশ্রাম দিতে এবং চোট শঙ্কা এড়াতে কাদিসের মাঠে রোববার লা লিগার এই ম্যাচে করিম বেনজেমা, ভিনিসিউস জুনিয়র, লুকা মদ্রিচসহ অনেককে বাইরে রেখে খেলতে নামে রিয়াল।

তাতে পুরো ম্যাচেই ভুগতে হয়েছে তাদের। ম্যাচের শুরুতে যদিও এগিয়ে যায় তারা। তবে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১-১ ড্রয়ে মাঠ ছাড়ে কাদিস। মারিয়ানো দিয়াসের গোলে রিয়াল এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন রুবেন সবরিনো।

পুরো ম্যাচে কাদিসের দাপুটে পারফরম্যান্স ছিল দারুণ নজরকাড়া। ম্যাচ পরিসংখ্যানেও যা স্পষ্ট ফুটে উঠছে; উভয় পক্ষই সমান সাতটি করে শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে। তবে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ার হিসাবে অনেক এগিয়ে কাদিস। তাদের ২১ শটের বিপরীতে রিয়ালের শট ১৬টি।

আলভারো নেগ্রেদো পেনাল্টি মিস না করলে তো অসাধারণ একটা জয় নিয়েই ম্যাচ শেষ করতে পারত কাদিস।

নামে-ভারে দলটি পুঁচকে হলেও তাদের বিরুদ্ধে রিয়ালের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও আশাব্যাঞ্জক ছিল না।

চলতি আসরে প্রথম দেখায় গত ডিসেম্বরে যেমন রিয়ালকে তাদের মাঠেই গোলশূন্য ড্রয়ে রুখে দিয়েছিল কাদিস। আর ২০২০-২১ মৌসুমে তো দলটির বিপক্ষে ঘরের মাঠে হেরেই গিয়েছিল লা লিগার সফলতম দলটি।

দীর্ঘ বিরতি শেষে গত মৌসুমেই লা লিগায় ফেরে কাদিস। ফেরার আসরে কেবল রিয়ালকেই পর্যদুস্ত করেনি তারা; প্রথম দেখায় হারিয়ে দিয়েছিল বার্সেলোনাকেও, আর কাতালান দলটির সঙ্গে ফিরতি দেখায় করেছিল ড্র। কাদিস ধাঁধা তো এ মৌসুমেও সমাধান করতে পারেনি বার্সেলোনা; এবার প্রথম দেখায় গোলশূন্য ড্রয়ের পর হেরে গেছে ফিরতি লেগে, ঘরের মাঠে।

শীর্ষ সারিতে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে রীতিমত জায়ান্ট-কিলারে পরিণত হওয়া দলটির বিপক্ষে এদিন অবশ্য শুরুতেই গোল পেয়ে যায় রিয়াল। শুরুর কয়েক মিনিটে প্রতিপক্ষের টানা আক্রমণ সামলে পঞ্চম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বল পায়ে আক্রমণে উঠে অসাধারণ নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষের তিন জনের মধ্যে দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে পাস দেন রদ্রিগো। বাঁ পায়ের ছোঁয়ায় বাকি কাজ সারতে কোনো সমস্যা হয়নি দিয়াসের।

গোল হজম করে দিক হারায়নি কাদিস। বরং বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও তারা করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। ৩৭তম মিনিটে গোল পেয়েও যায় দলটি।  

প্রতিপক্ষের একটি প্রতি-আক্রমণ ঠেকাতে হেডে চেষ্টা করেন এদের মিলিতাও, কিন্তু বল চলে যায় সবরিনোর পায়ে। ডি-বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে থেকে বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও চলতে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। ৬০তম মিনিটে নেগ্রেদোকে রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন ফাউল করলে পেনাল্টি পায় কাদিস। তবে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের স্পট কিক ঠেকিয়ে খানিক আগের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত্ব করেন ইউক্রেনের গোলরক্ষক লুনিন।

৭০তম মিনিটে আবারও বেঁচে যায় রিয়াল। কাছ থেকে নেগ্রেদোর হেড দারুণ ক্ষীপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ফেরান লুনিন। তারপরও সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সবরিনো।

শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর তিন ম্যাচে দুটিতে পয়েন্ট হারাল কার্লো আনচেলত্তির দল। বাকি রইল এক ম্যাচ।

৩৭ ম্যাচে ২৬ জয় ও সাত ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট হলো ৮৫।

এদিন একই সময়ে মাঠে নামে লিগের সব দল। গেতাফের মাঠে বিবর্ণ পারফরম্যান্সে গোলশূন্য ড্র করেছে বার্সেলোনা। তবে আরেক ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদ ঘরের মাঠে সেভিয়ার সঙ্গে ড্র করায় শাভি এরনান্দেসের দলের রানার্সআপ হওয়া নিশ্চিত হয়ে গেছে।

বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৩। ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আতলেতিকো। আর তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে চার নম্বরে সেভিয়া। শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে সেভিয়ারও।

দারুণ ফুটবল খেলেও কাদিসের অবনমন অঞ্চল এড়ানোর লক্ষ্য পূরণ না হাওয়াটা বড় হতাশার। ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে নেমে গেছে তারা। রায়ো ভাইয়েকানোকে হারিয়ে সমান পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে উঠেছে রিয়াল মায়োর্কা।

অনেক হিসাব-নিকাশ নিয়ে অপেক্ষা এবার শেষ রাউন্ডের।