সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ভারতে বিচার শেষে বাংলাদেশের এই আসামিকে ফেরত পাওয়া যেতে পারে।
দুই বছর আগে পালিয়ে যাওয়া পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদার গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ভুয়া নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ডসহ নাগরিকত্বের নানা নথি তৈরির অভিযোগ আসে দেশটির সংবাদ মাধ্যমে।
অবৈধ সম্পদের খোঁজে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অভিযানে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশি পি কে হালদার। ফলে আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি।
বাংলাদেশে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ৩৪টি মামলা রয়েছে। ফলে তার আটক হওয়ার খবর জানার পর এই বিষয়ক তদন্ত শেষ করতে তাকে পাওয়ার আশা করছে সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
পি কে হালদারকে কীভাবে ফেরত পাওয়া যাবে?
ভারত জানালেই পি কে হালদারকে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পি কে হালদারকে ফেরাতে সব চেষ্টা চলছে: দুদক
ভারতের সঙ্গে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পি কে হালদারকে পাওয়ার যে আশা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের সেট প্রসেডিওর আছে, এসব ক্ষেত্রে আমাদের একটি নীতি আছে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব।
“প্রথমে ভারত সরকার আমাদের জানাবে, এই লোক গ্রেপ্তার হয়েছে। হয়ত তাদের শাস্তি-টাস্তি দেবে। হয়ত আমাদের বলবে শাস্তির মেয়াদ বাংলাদেশে এসে কমপ্লিট করবে। এটা আমরা অন্যান্য দেশেরটাতে করি, তারাও আমাদের সাথে করবে।”
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিবেচনায় তুলনামূলক আগেই পি কে হালদারকে ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমার ধারণা, আমাদের সাথে ভারতের যে সোনালী অধ্যায়, তাতে অবশ্যই আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যা করতে চাই, তারা আমাদের কথা শুনবেন।
“সে অনুযায়ী কাজ হবে। হয়ত তার কিছু বিচার হবে। তারপরে হয়ত আমাদের দেবে।”
উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “অনুপ চেটিয়ার ব্যাপারে আমাদের দেশে প্রথম বিচার হয়েছে। তারপরে আমরা ফেরত দিয়েছি। একই প্রসেডিওর হয়ত হবে, এটা আমি এখনও জানি না। আমাদের আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে।”
পি কে হালদার আটকের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কিছু জানে না বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন কোনো উদ্যোগ নেবে কি না- প্রশ্নে মোমেন বলেন, “আপনারা বললেন পরশুদিন সন্ধ্যা বেলায়, এই খবর। আমাদের অফিস-টফিস বন্ধ ছিল। যেটা করা প্রয়োজন, আমরা করব। বলেছি তো, যা যা করার আমরা সেটা করব।”
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবেশী দেশের অপরাধীদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা আমাদের দেশের নাগরিকের বিষয়ে ভাবছি।”