তাদের মধ্যে ৫৩ সেনা গুরুতর আহত। তাদেরকে কাছের নোভোয়াজোভস্কি শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান ইউক্রেইনের উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার। নোভোয়াজোভস্কি শহরটি রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে।
আরো ২১১ জন সেনাকে হিউম্যান করিডোর দিয়ে বের করে আনা হয়েছে। তারা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়েন্ত্রণে থাকা আরেক শহর ওলেনিভকাতে গেছেন।
আজভস্তাল স্টিলওয়ার্কসে আটকে পড়া আহত সেনাদের উদ্ধারে দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়ার খবর রাশিয়া আগেই দিয়েছিল বলে মঙ্গলবার জানায় বিবিসি।
প্রায় এক ডজন বাসে করে ইউক্রেইনের সেনাদের সোমবার সন্ধ্যায় সরিয়ে নেয়া হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত সংবাদ মাধ্যম থেকেও মারিউপোলের সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার ছবি পোস্ট করে বলা হয়, আজভস্তালের আহত ইউক্রেইনীয় সেনাদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
মালিয়ার জানান, বন্দি রুশ সেনাদের সঙ্গে আজভস্তালের ওই সেনাদের বিনিময় করা হবে।
স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাতের পর (মঙ্গলবার) ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় সেনাদের উদ্ধার কাজে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা এবং মধ্যস্থতাকারী দলের পাশাপাশি রেড ক্রস এবং জাতিসংঘের ভূমিকা থাকার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেইনের নায়কদের বেঁচে থাকা দরকার।”
মারিউপোলের অবরুদ্ধ ইউক্রেইনীয় সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
তবে তিনি উদ্বেগের সঙ্গে এও বলেছেন, ইউক্রেইনের সেনাদের এখনই মুক্তি দেওয়া নাও হতে পারে। তিনি সেনাদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য ‘আন্তরিকতা এবং সময়’ প্রয়োজন বলেও সতর্ক করেন।
স্টিল প্ল্যান্ট থেকে উদ্ধার করা সেনাদের সঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক আইন মেনে’ আচরণ করা হবে বলে মঙ্গলবার আশ্বস্ত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। মার্চের প্রথম দিকে রুশ সেনাবহিনী ইউক্রেইনের দক্ষিণের বন্দর নগরী মারিউপোল ঘিরে ফেললে কয়েক শ ইউক্রেইনীয় সেনা- যাদের মাধ্যে মেরিন, ন্যাশনাল গার্ড, আজভ রেজিমেন্টসহ, বর্ডার গার্ড, পুলিশ এবং আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ইউনিটের সেনা আজভস্তাল স্টিল প্ল্যান্টে আটকে পড়েন। তাদের সঙ্গে শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও আটকা পড়েছিলেন।
চার বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত কমপ্লেক্সটি পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য তৈরি করা। সেখানকার টানেলগুলোর নাকশা এমন যে সেগুলো আস্ত একটি গোলকধাঁধা।
রাশিয়া প্রথমে সেখানে হামলার করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু হামলায় রুশ বাহিনীরও বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে আশঙ্কায় গত মাসে পুতিন হামলার পরিকল্পনা প্রত্যাহার করেন। কিন্তু সেখানে ভারি বোমা বর্ষণ অব্যাহত ছিল বলে দাবি ইউক্রেইনীয় কমান্ডারদের।
কায়েক সপ্তাহ আটকে থাকার পর এই মাসের শুরুতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে মারিউপোল থেকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এবং ইউক্রেইন নিয়ন্ত্রিত উভয় অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
আজভস্তাল স্টিল প্ল্যান্টের মাটির নিচের বাঙ্কারে এখনো কত মানুষ রয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানায় বিবিসি।