মঙ্গলবার জেলা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা করে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান শিকদার সাংবাদিকদের বলেন, “বিচারক আব্দুল হান্নান মামলা গ্রহণ করে ভোরের কাগজকে একটি সমন পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী ৩ জুলাই সমনের জবাব দিতে বলা হয়েছে।”
মামলায় ভোরের কাগজের প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বার্তা সম্পাদক ইকতিয়ার উদ্দিন, নিজস্ব প্রতিবেদক রুহুল আমিন চৌধুরী ও ভোরের কাগজের কুমিল্লার প্রতিনিধি এম ফিরোজ মিয়াকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত রোববার দৈনিক ভোরের কাগজে ‘শীর্ষ মাদক কারবারি রিফাত এখন নৌকার কাণ্ডারি’ শীর্ষক একটি খবর প্রকাশ করা হয়, যা একেবারেই ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীর মানহানি হয়েছে।
মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাত সাংবাদিকদের বলেন, “চার বছর আগে যদি তালিকায় আমার নাম আসে, তাহলে আমার কাছে এতদিন কেন কোনো নোটিশ আসেনি? মামলাও হয়নি কেন? এখন নির্বাচনের সময় কেন এমন সংবাদ পরিবেশন করতে হবে? এটা নিশ্চয়ই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাদক, চোরাকারবার ও এর পৃষ্ঠপোষকদের চট্টগ্রাম বিভাগের তালিকাসহ একটি চিঠি পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাইয়ের পর তালিকাভুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে।
গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় দেশব্যাপী ওই তালিকা করা হয় বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। এতে আরও বলা হয়, ওই তালিকায় কুমিল্লা জেলার মাদক ও চোরাকারবারিদের ১৬ জন পৃষ্ঠপোষকের নাম ছিল। এর মধ্যে কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা আরফানুল হক রিফাতের নাম ছিল শীর্ষে; যিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নেতারা প্রতিবেদনের ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘নির্বাচনে রিফাতের নিশ্চিত বিজয় ঠেকাতে একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে’ বলে দাবি করেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেন না। তিনি কষ্টিপাথরে যাচাই করে আরফানুল হক রিফাতকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন।
“রিফাত দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তিনি রাজনীতি করতে গিয়ে অসংখ্যবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন আদর্শবান নেতা। তাকে নিয়ে এসব অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।”
সভায় নেতারা দাবি করেন, রিফাত কিংবা তারা সেই তালিকা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
শুক্রবার স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় রিফাতকে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনি দুইবারের মেয়র ও বিএনপি নেতা মো. মনিরুল ইসলাম সাক্কুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কিছু তথ্য:
তফসিল ঘোষণা: ২৫ এপ্রিল
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ: ১৭ মে
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই: ১৯ মে
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ: ২৬ মে
প্রতীক বরাদ্দ: ২৭ মে
ভোট গ্রহণ: ১৫ জুন
পুরানো খবর:
রিফাতকে নিয়ে ‘অপপ্রচার’ হচ্ছে, অভিযোগ কুমিল্লা আওয়ামী লীগের
কুমিল্লায় ভোটের এক মাস আগেই মাঠে বিজিবি
কুমিল্লায় সোহেলের ওয়ার্ডে ভোটের মাঠে মুখোমুখি স্ত্রী ও ভাই
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে দুটি কেন্দ্র বেড়েছে
কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল
কুমিল্লা সিটির প্রশাসকের দায়িত্বে সফিকুল ইসলাম
কুসিক নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মনোয়নপত্র নিলেন সাংসদ সীমা