আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) এই ছবিগুলো প্রকাশের পর এই
মুঘল স্থাপত্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ওই বিভাগের ‘আগ্রা
সেল’ বলছে, সেখানে রহস্যময় কিছুই নেই।
তাজমহলের তালাবদ্ধ ২২টি কক্ষ নিয়ে এএসআইর ছবি প্রকাশের খবর সোমবার দিয়েছে
ভারতের সংবাদপত্র দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
প্রয়াত স্ত্রী মমতাজ মহল স্মরণে আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে মুঘল সম্রাট
শাহজাহানের নির্মিত তাজমহল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থানের একটি।
ছবি: রয়টার্স
এই তাজমহলের ২২টি তালাবদ্ধ কক্ষ খুলে সেগুলোর রহস্য প্রকাশ করতে সম্প্রতি
আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক সদস্য।
রজনীশ সিং নামের ওই ব্যক্তির আবেদন করেন, কক্ষগুলোতে হিন্দু দেবতা শিবের
একটি মন্দির রয়েছে বলে যে দাবি কিছু ইতিহাসবিদ ও ভক্ত করে থাকেন, তিনি তা পরীক্ষা
করে দেখতে চান।
তাজমহলের সেই বন্ধ কক্ষগুলোর রহস্য কী?
গত ১২ মে এলাহাবাদ হাই কোর্ট রজনীশের সেই আবেদন নাকচ করে দিলেও তা নিয়ে
আলোচনা-গুঞ্জন চলতে থাকে।
এর মধ্যেই এএসআই আলোচিত সেই কুঠুরিগুলোর মধ্যে চারটির ছবি প্রকাশের খবর
জানাল।
এই ছবিগুলো গত বছরের ডিসেম্বরে তোলা বলে জানিয়েছে আগ্রা সেলের কর্মকর্তারা।
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ ওই কক্ষগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের
কাজ হয়েছিল। ছবিগুলো তোলা হয় তখনই।
ইন্ডিয়ান টাইমস লিখেছে, এএসআই
বলছে যে তাদের গত জানুয়ারির নিউজলেটারে ছবিগুলো প্রকাশ হয়, যদিও সেই নিউজলেটার
তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে গত ৫ মে, আর তারা টুইোরে সেগুলো তোলা হয়েছে তার চার
দিন পর ৯ মে।
ছবি: রয়টার্স
আগ্রা সেলের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান টাইমস জানিয়েছে, ওই কুঠুরিগুলোতে
কোনো গোপনীয়তা নেই। সেগুলো মূল কাঠামোরই অংশ। এগুলোর কোনো বিশেষত্বও নেই। আর শুধু
তাজমহল নয়, এমন দিল্লিতে সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিসহ বিভিন্ন মুঘল স্থাপনায়ও এমন বৈশিষ্ট্য
রয়েছে।
আগ্রায় বেড়ে ওঠা ইতিহাসবিদ রানা সাফভি এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, ১৯৭৮
সালের বন্যার আগে ভূগর্ভস্থ এই কক্ষগুলো দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এসব কক্ষের ভেতরে
কিছুই নেই।
“ওই বন্যায় সমাধিসৌধে জল ঢুকে পড়ে, কিছু ভূগর্ভস্থ
কক্ষে পলি পড়েছিল এবং ফাটল ধরেছিল। সে সময় কর্তৃপক্ষ কক্ষগুলো বন্ধ করে দেয়। তবে সংস্কার
কাজের জন্য কক্ষগুলো মাঝেমধ্যে খোলা হয়।”
এএসআইর আগ্রা সেলের কর্মকর্তারা
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, সাম্প্রতিক সংস্কার কাজের সময় নিয়মিতই ছবি তুলে তা দিল্লিতে
সদর দপ্তরে পাঠানো হত, ওই ছবিরই কয়েকটি নিউজলেটারে স্থান পেয়েছে। যে চারটি ছবি প্রকাশিত
হয়েছে, ওইগুলো ডিসেম্বরে তোলা।