তিনি বলেছেন, “অর্থ ব্যয়ে সাশ্রয়ী ও পরিতিমিতিবোধ দেখাতে হবে, অপচয় করা যাবে না, পিএম নির্দেশ দিয়েছেন।”
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সরকারপ্রধানের তরফ থেকে এই নির্দেশনা আসে। পরে সংবাদ সম্মেলনে সভার আলোচনার বিষয়ে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ওই বৈঠকে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জন্য ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের প্রায় ৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন পায়।
পরে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “আলোচনায় আরেকটা বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে, সেটা হল অপচায় রোধ করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের সাধারণ মানুষকে কৃচ্ছ্রসাধন ও সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।”
মহামারীর ধকল সামলে বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়ানোর পথে, সেই সময় ইউক্রেইন যুদ্ধ নতুন করে সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যন্ত হওয়ায় বেড়ে গেছে খাদ্য ও জ্বালানির দাম, সেই সঙ্গে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে।
আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় টান পড়ছে ডলারের রিজার্ভে। ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পড়ে যাচ্ছে টাকার মান। এর মধ্যে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া হওয়ার দশাও ভয় জাগাচ্ছে।
সরকার বলে আসছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি গত কয়েক বছরে যে ভিতের ওপর দাঁড়িয়েছে, তাতে শ্রীলঙ্কার পরিণতি হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই।
তারপরও বিশ্বের কয়েকটি বড় ব্যাংক সামনের দিনগুলোতে মন্দার আভাস দেওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরাও আর্থিক নীতিতে সংযমী হওয়ার তাগাদা দিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার এনইসি সভায় খোদ সরকারপ্রধানের নির্দেশনাতেও সেই সুর মিললো।
মান্নান বলেন, “সরকারি-বেসরকারি সকল খাতে সকল বিষয়ে সাশ্রয়ী হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎ-পানি থেকে শুরু করে কোনো খাতে অপচয় করা যাবে না।
“প্রধানমন্ত্রী ভ্রমণের বিষয়ে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং সকল বিষয়ে সাশ্রীয় হতে হবে, অহেতুক সম্পদ নষ্ট করবেন না।”
তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কৃচ্ছ্রতা সাধনের এই পরামর্শে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এই বার্তা ভয়ের কোনো কারণে নয়। আমরা সঠিক পথেই আছি। অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের তুলনীয় নয়। তবে নিজের ঘর সামলানো অনেক বেশি দরকার, সেটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।”
প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন জানিয়ে মান্নান বলেন, “কোন প্রকল্প দেশ এবং জনগণের জন্য আগে প্রয়োজন, সেটা আগে আনতে বলেছেন। তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘বাড়াবাড়ি করবেন না, ঘরে বাইরে, সরকারের ভিতরে অপচয় বন্ধ করতে হবে’।”
অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, আইএমইডি সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন আল রশীদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।