সুপ্রিম কোর্ট থেকে মঙ্গলবার দেয়া ওই আদেশে বলা হয়, বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশ ও নামাজ পড়ায় কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
বরং ওই মসজিদে অজুর জন্য নির্ধারিত পুকুরে ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়ার যে দাবি করা হয়েছে তার সত্যতা বিচারের জন্য শুধু ওই স্থানের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সে জন্য মুসলমানদের মসজিদে প্রবেশে যেন বাধা দেওয়া না হয়। নামাজেও কোনো বাধা সৃষ্টি চলবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সম্প্রতি পাঁচজন হিন্দু নারী স্থানীয় আদালতের কাছে জ্ঞানবাপি মসজিদের একটি অংশে পূজা করার অনুমতি চান। তাদের দাবি, সেখানে একসময় একটি হিন্দু মন্দির ছিল।
তাদের আবেদনের পর স্থানীয় আদালত মসজিদ প্রাঙ্গনে জরিপ করার নির্দেশ দেন। জরিপ দল মসজিদের পুকুরে ‘শিবলিঙ্গ’ এবং হিন্দু ধর্মের আরো কিছু চিহ্ন খুঁজে পাওয়ার দাবি করেন। যদিও অনেকের দাবি, যেটিকে ‘শিবলিঙ্গ’ দাবি করা হচ্ছে সেটি আসলে পুকুরে থাকা ‘ফোয়ারা’।
জরিপ দলের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর স্থানীয় আদালত থেকে জ্ঞানবাপি মসজিদে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি প্রবেশ করতে এবং নামাজ পড়তে পারবেন বলে আদেশ জারি করে।
ওই রায় ১৯৯১ সালের ‘প্লেসেস অব ওরশিপ অ্যাক্ট’–এর পরিপন্থী বলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি এস নরসিংহের বেঞ্চে।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান ‘ঠিক কোথায় শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে’?
জবাবে উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবেদনটি (জরিপ দলের) দেখিনি।”
বিস্তারিত তথ্য আদালতে উপস্থাপনের জন্য তিনি বুধবার পর্যন্ত সময় চান বলে জানায় এনডিটিভি।
আদালত তাকে সময় দিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরো বলেছেন, মুসলমানদের ধর্মীয় আচারে অজু করা আবশ্যিক। তা করতে বাধা দেওয়া যাবে না। বারানসির জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়ে তিনি আরো বলেছেন, ঠিক যে জায়গা নিয়ে কথা উঠেছে সেই জায়গার নিরাপত্তার ব্যবস্থা তাকে করতে হবে। কিন্তু সে জন্য মুসলমানদের প্রবেশ ও নামাজে বিঘ্ন ঘটানো যাবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত জ্ঞানবাপি মসজিদটি উত্তর প্রদেশের ওইসব মসজিদগুলোর একটি যেখানে আগে হিন্দু মন্দির ছিল বলে বিশ্বাস হিন্দুদের।