মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে শহরের মধ্যবাজার, উকিলপাড়া, নবীনগর, তেঘরিয়া সাববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি বাজার, বক্ষব্যাধি ক্লিনিকসহ তুলনামূলক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে কোথাও কোথাও সড়ক আংশিক ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পৌর মেয়র নাদের বখত।
তিনি আরও বলেন, পানি প্রবেশ করেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িতেও।
এ ছাড়া বিশ্বম্ভরপুর-শক্তিয়ারখলা সড়ক, ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কও প্লাবিত হয়েছে। এতে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সুরমা নদী উপচে সোমবার সকাল থেকে পাশের সিলেট নগরীর নিচু এলাকায়ও পানি প্রবেশ করে। এতে নগরীর উপশহর, সোবহানিঘাট, কালিঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি, দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল, গ্রামীণ সড়ক প্লাবিত হওয়ার ফলে কিছু স্থানে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছে চাল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, রোববার পর্যন্ত সুনামগঞ্জে প্রাক-বর্ষা ছিল। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বর্ষা। এক সপ্তাহ ধরে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তবে গত শুক্রবার থেকে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে মূলত পানি বাড়তে থাকে। ওই সময় থেকে প্রতিটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে।
“সোমবার রাতভর প্রবল বৃষ্টি হয়। পাহাড়ি ঢলের কারণে মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় প্রায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।”
শামসুদ্দোহা আরও বলেন, “মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই সময়ে সীমান্ত নদী যাদুকাটার পানি ৭ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া পুরাতন সুরমা নদীর পানিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।
জেলায় প্রবাহিত কুশিয়ারা নদী, পাটলাই, বৌলাই, চলতি, চেলা, খাসিয়ামারা, মহাসিং, কালনীসহ প্রতিটি নদ-নদীর পানিই বাড়ছে। একই সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও অব্যাহত রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, পাহাড়ি ঢলে বিশ্বম্ভরপুর-শক্তিয়ারখলা সাবমার্জিবল সড়ক প্লাবিত হয়েছে। ঝুঁকির মুখে আছে কয়েকটি সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক।
তিনি আরও বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে ও পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বিভিন্ন সড়ক শুধু প্লাবিতই হচ্ছে না ভেঙে যাওয়ার উপক্রমও হচ্ছে।
ছাতক বাজারের স্কুলশিক্ষক তমাল পোদ্দার বলেন, মঙ্গলবার ভোরে সুরমা নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: