বুধবার সকালে মোহাম্মদপুর বাবর রোডের মক্কা মদিনা জেনারেল
হাসপাতাল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী
কমিশনার মো. মুজিব পাটোয়ারী।
গ্রেপ্তাররা হলেন- দেওয়ান মো. আনিসুর রহমান, এ কে এম
নিজামুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার মারুফ আহমেদ ও নার্স মুক্তা। এর মধ্যে আনিসুর
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরও চিকিৎসক।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রোজার শুরুর দিকে মুন্সীগঞ্জের বাসায়
দোলনায় খেলার সময় হঠাৎ পড়ে গিয়ে সাত বছরের শিশু আতিকার ডান পায়ের উরুর হাড় ভেঙে
যায়।
স্থানীয়ভাবে প্রথমে কবিরাজের চিকিৎসা নিয়ে উন্নতি না হওয়ায় শিশুটির
বাবা আজিম মিয়া গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও
পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে আসেন।
আজিম মিয়ার বরাত দিয়ে সহকারী কমিশনার মুজিব পাটোয়ারী বলেন,
“সেখানে
দালালরা পঙ্গু হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা হয় না বলে তাদের প্রলুদ্ধ করে ওই রাতেই
মক্কা-মদিনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।
“এই হাসপাতালের মালিক নুর
নবীর সঙ্গে অপারেশনের কথা বলে ৩২ হাজার টাকার চুক্তি হয়। অপারেশনের আগে ২০ হাজার
টাকা দেন শিশুর বাবা।”
রাতেই শিশুটির পায়ে অস্ত্রোপচার হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “ফুল
অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অপারেশন শুরুর পর উরুর হাড় জোড়া লাগাতে চিকিৎসকদের মধ্যরাত
পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
“কিন্তু শিশুটির জ্ঞান
ফেরার নির্ধারিত সময়ের আগেই সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা চলে যান। ভোরে
নার্স এসে দেখেন শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি, পরে ডাক্তার এসে মৃত ঘোষণা করেন।”
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অস্ত্রোপচার এবং তার পরবর্তী সময়ে এ
ধরনের রোগীর যে পরিচর্যা দরকার সেটা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির বাবা আজিম
মিয়া।
তার এসব অভিযোগের ভিত্তিতে পরে মামলা হলে চিকিৎসক ও নার্সসহ
চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান মোহাম্মদপুর থানার ওসি
আব্দুল লতিফ।
আজিম মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “অপারেশনের
আগে মেয়েকে পুরো অজ্ঞান করা হয়। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি। ভোরের দিকে মুখ ফ্যাকাসে
দেখে তার মা ডাকাডাকি শুরু করলে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি তাদের কাছে চেপে যেতে চেয়েছিল
এবং মেয়ের চিকিৎসায় তারা চরম গাফিলতি করেছে বলে অভিযোগ করেন আজিম।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা চিকিৎসক ও নার্সদের কারও
বক্তব্য পাওয়া যায়নি।