বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে কেনা
পণ্য বিদেশ থেকে দেশে আসছে কি না তা নিশ্চিত হতেই এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশনা
মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এর আগে রপ্তানি করা পণ্যের
বেলায় একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার অনুমোদিত ডিলার (এডি)
ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো এ সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, পণ্য আমদানিতে শিপমেন্ট
(জাহাজ, কন্টেইনার) ট্র্যাকিং বাধ্যতামূলক। এটি নিশ্চিত হয়েই সব ধরনের অর্থ পরিশোধ
করতে হবে।
‘ট্রেডবেইজড মানিলন্ডারিং’
বা বাণিজ্যে অর্থপাচার প্রতিরোধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে।
এ সিদ্ধান্ত আমদানির বিপরীতে বিদেশি মুদ্রা খরচের বিষয়ে কিছুটা কড়াকড়ি আনবে।
এর আগে ডলার সাশ্রয়ে আমদানি
চাপ কমাতে অপ্রয়োজনীয় পণ্য বিদেশ থেকে কেনা বন্ধ করতে এলসি মার্জিন পণ্য বিশেষে ৫০
ও ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল পণ্য রপ্তানিতেও
এমন সিদ্ধান্ত দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আমদানি পণ্যের উৎস, কোন কোন
বন্দর ব্যবহার করে কত দিনে দেশে এসে কোন বন্দরে খালাস হচ্ছে- তার সঙ্গে কাস্টমসের কাগজপত্রে
মিল রয়েছে কি না তা যাচাই করে দেখতেই এমন পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য জালিয়াতি
ও মুদ্রা পাচার থেকে সতর্ক থাকতে বিষয়টি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সংশ্লিষ্ট ২০২০ সালের জুলাইতে
দেওয়া আরেক সার্কুলারে বলা হয়, ‘শিপমেন্ট’ ট্র্যাকিং করতে বলা হয়। এতে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক
সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ট্র্যাকিং করতে পারত। এজন্য আলাদা চার্জ বা মাশুল বিদেশে পাঠানোর
জন্য ব্যাংকগুলোকে অনুমোদন দেয়।
এরপর গত ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ
ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, ‘ভেসেল’ বা পণ্যবাহী জাহাজও ট্র্যাকিং করতে হবে। এটি ব্যাংকগুলোকেই
করতে হবে।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি
ইইউনিট (বিএফআইইউ) কর্তৃক প্রণীত ‘ইনফ্রাস্টাকচার লেবেল রিক্স এসেসমেন্ট অব গাইডলাইনস
ফর প্রিভেনশন অব ট্রেডবেইজড মানি লন্ডারিং’ এর অধীনে ব্যাংকগুলোকে সফটওয়্যারসহ প্রয়োজনীয়
অবকাঠামো স্থাপন করতে নিদের্শনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে
তা যথাযথ বা সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের অনুমতি থাকতে হবে বলেও সার্কুলারে বলা হয়।
বর্তমানে জাহাজ বা কন্টেইনার
ট্রেকিং করতে বেশকিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল
মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইওএম) বা আন্তর্জাতিক সমু্দ্রচলাচল সম্পর্কিত সংস্থা ‘’ কর্তৃক
অনুমোদিত হতে হয় এসব সফটওয়্যার।
দেশে গত বছর থেকেই পণ্য আমদানিতে
প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশের উপরে যাওয়ায় ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বর্তমানে
ব্যাংকিং চ্যানেলে ৮৭ টাকা ৭০ পয়সা ও খোলা বাজারে ১০২ টাকা হয়েছে মঙ্গলবার।
আমদানির এমন চাপের প্রেক্ষিতে
আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে অর্থপাচার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ করছেন অর্থনীতিবিদরা। পণ্য
কিভাবে কোথা থেকে আসছে, আদৌ আসছে কি না তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ডলারের চড়া মূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির
সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত দুটি নিল যাতে আমদানি চাপ কমানো সম্ভব হয়, বলে জানিয়েছেন
সংশ্লিষ্টরা।