শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মুশফিক। দায়িত্বশীল ইনিংসটি খেলার পথে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
২০০৫ সালের ২৬ মে ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে শুরু হয়েছিল টেস্ট ক্রিকেটে তার যাত্রা। সব ঠিক থাকলে ঢাকা টেস্টের মাঝ পথে ক্যারিয়ারের ১৭ বছর পূর্ণ হবে তার। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রাপ্তি কম নয়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তারই আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। কিপার হিসেবে তার দুটি ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি নেই ক্রিকেট ইতিহাসেই আর কারো।
তারপরও সবার আগে পাঁচ হাজার রানের ঠিকানায় পৌঁছানো বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে মুশফিককে।
একটা সময় এই মাইলফলক মনে হতো অনেক দূরের পথ। এখন সময় বদলে গেছে। টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে। ধীরে ধীরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। মুশফিক চান উন্নতির এই ধারা এগিয়ে নিয়ে যাক পরের প্রজন্মের ব্যাটসম্যানরা। তাদের হাতে ধরা দিক আরও বড় বড় অর্জন।
বাংলাদেশ দল মুশফিকের এই অর্জনকে বিশেষ হিসেবে দেখছে। তাই দিনের খেলা শেষে এই কীর্তি উদযাপন করেছে কেক কেটে। কেক কাটার পর সবার আগে মুশফিক তুলে দেন দলের তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের মুখে।
এ যেন প্রতীকি এক চিত্র। হাত বদলে ধীরে ধীরে ব্যাটন চলে যাবে এই তরুণদের হাতে। যাদের ওপর মুশফিকের অনেক আস্থা। পরে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এই অধিনায়ক বললেন সেই কথাই।
“কেক কেটে ড্রেসিংরুমে যে উদযাপন করছিলাম, তখন জয়কে প্রথম কেক খাইয়ে বলেছি যে, ‘তুই এখানে সবচেয়ে কনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান। তো আমি আশা করি, তোর ১০ হাজার রানের সময়, তুই আরেক জনকে খাওয়াবি।’ এই জিনিসটা আমরা যতটুকু ছেড়ে যাব, সেখান থেকে যেন ওরা এগিয়ে নিয়ে যায়। তাহলেই বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাবে।”
দুই দশকের বেশি অপেক্ষার পর টেস্টে প্রথম পাঁচ হাজারের দেখা পেল বাংলাদেশ। পরেরটি দ্রুতই হয়ে যাওয়ার কথা। তামিম ইকবাল কেবল ১৯ রান দূরে দাঁড়িয়ে। শুরুর ভোগান্তির পর ধীরে ধীরে ভালো করতে শুরু করেছেন লিটন দাস। পাঁচ টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারেই জয় দেখিয়েছেন, অনেক দূর যাওয়ার সামর্থ্য আছে তার। তাদের হাত ধরে এমন আরও অনেক মাইলফলক ছোঁয়ারই কথা বাংলাদেশের।
মুশফিক মনে করেন, তাদের পরের প্রজন্মের ব্যাটসম্যানরা পেরিয়ে যাবে ১০ হাজার রানের সীমানা। সেই পথে আজকের এই প্রাপ্তি একটা উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। তাই নিজের অর্জনে ভীষণ খুশি মুশফিক।
“হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো লাগছে যে, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আমি ৫ হাজার রান করেছি এবং আমি আশা করছি এটাই শেষ না। আমি মনে করি, অনেক খেলোয়াড় আছে যারা অনেক সামর্থ্য রাখে। শুধু সিনিয়র আমরা যারা আছি তারা না, যারা জুনিয়র আছে ওরাও আমি মনে করি যে, ভবিষ্যতে দেখতে পারব ৮ হাজার, ১০ হাজার রান করছে টেস্টে।”