ক্যাটাগরি

ইউটিউব বা নেট বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার

ইউক্রেইনে সামরিক হামলা শুরু করার পর বেশ কয়েকটি পশ্চিমা সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। ইউটিউবের বিরুদ্ধে বেআইনি কনটেন্ট মুছতে ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছিল মস্কো। আর ইউক্রেইনে রুশ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের কনটেন্ট প্রচারণায় বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে ইউটিউব। ওই ঘটনার জেরে প্ল্যাটফর্মটিকে একাধিকবার জরিমানাসহ নানা আরও কঠোর শাস্তির হুমকি দিয়েছিল পুতিন প্রশাসন।

তবে, এখন পর্যন্ত ইউটিউবকে নিজ ভুখণ্ডে নিষিদ্ধ বা ব্লক করেনি রাশিয়া।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রতি মাসে নয় কোটি রুশ নাগরিক নিয়মিত ইউটিউব ব্যবহার করেন। প্ল্যাটফর্মটি সেখানে কেবল জনপ্রিয়ই নয়, ডিজিটাল অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখে।

পশ্চিমা সামাজিক মাধ্যমগুলোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী একাধিক প্ল্যাটফর্ম আছে রাশিয়ায়। তবে, ইউটিউবের বিকল্প হিসেবে বাজারে অবস্থান তৈরি করতে পারবে এমন কোনো বড় প্ল্যাটফর্ম এখনও নেই সেখানে।

এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী মাকসুত শাদায়েভ শিক্ষাবিষয়ক এক ফোরামে বলেছেন, “আমরা ইউটিউব বন্ধ করার পরিকল্পনা করছি না। সবকিছুর ওপরে, আমরা যখনই কোনো কিছুর ওপর বিধিনিষেধ দেই, আমাদের এটা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে আমাদের ব্যবহারকারীরা যেন ভোগান্তিতে না পড়েন।”

ফোরামে উপস্থিত তরুণ রাশিয়ানদের কাছে প্রতিযোগিতাই উন্নয়নের চালিকাশক্তি এবং সেটি ব্লক করা একটি চরম পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন শাদায়েভ।

শাদায়েভর সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি রয়টার্স।

অন্যদিকে, ২০২১ সালের পুরোটা জুড়েই ‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিত প্রথমসারির পশ্চিমা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নানাভাবে চাপে রেখেছিল রাশিয়া। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার রেষারেষি নতুন মাত্রা পেয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে সামরিক হামলা শুরু হওয়ার পর। বর্তমান পরিস্থিতিকে পুরোদস্তুর তথ্য যুদ্ধ বলে আখ্যা দিয়েছে রয়টার্স।

মার্চ মাসের শুরুতেই ফেইসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে রাশিয়া। ইউটিউব দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলোর চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ায় গুগলকে সাজা দেওয়ার শপথ নিয়েছিল রাশিয়া কর্তৃপক্ষ।

ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেইনে তাদের পরিচালিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে ইউটিউব।

অন্যদিকে, মার্চ মাসেই রাশিয়ায় ‘চরমপন্থী কর্মকাণ্ডের’ দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ফেইসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। তবে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেশকভ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, একই কোম্পানির ফটো শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামের প্রত্যাবর্তনও প্রশ্নের বাইরে নয়। তবে, এক্ষেত্রে রাশিয়ায় স্থানীয় অফিস থাকতে হবে মেটার, মানতে হবে দেশটির আইন।

রাশিয়া বৈশ্বিক ইন্টারনেট কাঠামো থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে সে সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছেন শাদায়েভ।

“আমরা নিজেদের কারও থেকেই বিচ্ছিন্ন করতে চাই না। বরং তার উল্টোটা, আমরা মনে করি য়ে রাশিয়ার বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের অংশ হয়েই থাকা উচিত।”