মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণ চুক্তি সাময়িকভাবে
স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর মঙ্গলবারের এক বিবৃতিতে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার
ইঙ্গিত দিয়েছে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি।
টুইটারের নয় শতাংশ শেয়ার কেনার পর থেকেই
একর পর এক নাটকীয়তার জন্ম দিচ্ছেন মাস্ক। সর্বশেষ, টুইটারে উপস্থিত স্প্যাম বট অ্যাকাউন্টের
সঠিক সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। টুইটারের দাবি,
তাদের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মধ্যে স্প্যাম বট অ্যাকাউন্টের হার পাঁচ শতাংশের কম। আর
মাস্ক বলছেন, বট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
বট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক
সমাধানের আগ পর্যন্ত অধিগ্রহণ চুক্তি নিয়ে আগাবেন না বলে জানিয়েছেন মাস্ক। প্রস্তাবিত
দাম পুনমূল্যায়নের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
মাস্কের ওই টুইটের পর মঙ্গলবার রাতেই
টুইটারের পরিচালনা পর্ষদের বিবৃতির একটি কপি হাতে পেয়েছেন সিএনএনের এক সংবাদকর্মী।
তাতে টুইটার পরিচালকরা বলেছেন, “মাস্ক ও পরিচালনা পর্ষদ ৫৪ ডলার ২০ সেন্ট দামে প্রতিটি
শেয়ার লেনদেনের সমঝোতায় এসেছিল। আমরা বিশ্বাস করি যে ওই সমঝোতাই শেয়ারমালিকদের জন্য
সেরা হবে। আমরা লেনদেন সম্পন্ন করতে চাই এবং একিভুতকরণ সমঝোতা কার্যকরে চাপ দেবো।”
পরিচালনা পর্ষদের বক্তব্যের শেষ অংশের
প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সিএনএন। ‘একিভুতকরণ সমঝোতা কার্যকরে চাপ দেবো’ বলে, প্ল্যাটফর্মটি
প্রয়োজনে ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে বলে মন্তব্য সংবাদমাধ্যমটির।
তবে, দিন শেষে মাস্ক ক্রয় প্রস্তাব বাতিল
করে সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গের ক্ষতিপূরণ দিয়ে পিছু হটতে পারেন বলে বাজার বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কার
কথা জানিয়েছে সিএনএন। বাজার বিশ্লেষক ড্যানি আইভসের মতে, “মাস্কের সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গের
ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্রয় প্রস্তাব থেকে পিছু হটার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশের বেশি।”
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, মাস্ক
পিছু হটলে টুইটারের কী হবে? টেসলা প্রধানের বদলে দৃশ্যপটে নতুন কোনো ক্রেতার আবির্ভাব
হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নও ঘুরছে প্রযুক্তি বাজারে। এক্ষেত্রে, মাইক্রোসফট টুইটার
কিনতে আগ্রহী হতে পারে পারে, এমনটাও বলেছেন কেউ কেউ।
বিপাকে টুইটার কর্মীরা
মাস্ক ও পরিচালনা পর্ষদের মধ্যেকার নাটকীয়তার
সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সম্ভবত টুইটার কর্মীরা। সিএনএন জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের
অনিশ্চয়তায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তারা। প্রতিষ্ঠানটির ‘গ্লোবাল হেড অফ পার্টনার্স’ লারা
কোহেন মাস্কের নাম উল্লেখ না করে টুইট করেছেন, “কিছু সংবাদমাধ্যম যেভাবে তার প্রচারণা
চালাচ্ছে, তিনি কিছু বললেই হেডলাইন লিখছে (সেটি আইনিভাবে বা বাস্তবিকভাবে সঠিক হোক
বা না হোক), যা ২০১৬ সালের ট্রাম্প প্রচারণার মতো এবং দেখা সত্যিই কষ্টকর।”
অন্যদিকে, প্রযুক্তি শিল্পে জোর গুঞ্জন
চলছে, স্প্যাম বট আদতে লোক দেখানো অজুহাত; এমন প্রশ্ন তুলে আসলে টুইটারে দাম কমানোর
চেষ্টা করছেন মাস্ক। বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের এক কলামেও উঠে এসেছে একই মত। “মাস্ক
মিথ্যা বলছেন। স্প্যাম বটের কারণে চুক্তি থেকে পিছু হটছেন না তিনি। তিনি আসলে আরও কম
দাম দিতে চান”– উঠে এসেছে ওই কলামে।