গত ১৬ মে শুরু হওয়া এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া বুধবারই শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিকালে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় গত ৩ দিনে ২ হাজার ৬০০ জন নিবন্ধন করতে পেরেছেন।
“গ্রাম অঞ্চল থেকে পাসপোর্টসহ কিছু জটিলতার কারণে যোগ্য অনেকে নিবন্ধন করতে পারেননি। তাদের অনুরোধে ২২ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। সবাই হজে যাক, এটা মন্ত্রণালয়ও চায়। তাই তাদের অনুরোধ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত।”
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে হবে হজ। এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজে যেতে পারবেন। তাদের মধ্যে চার হাজার জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
২০২০ সালে হজের জন্য টাকা জমা নিয়ে নিবন্ধনের কাজ সারা হলেও মহামারীর কারণে সে বছর এবং পরের বছর কারও হজে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। এবার তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ২০২০ সালের নিবন্ধিত সব হজযাত্রী এবং প্রাক-নিবন্ধনের ২৫ হাজার ৯২৪ ক্রমিক পর্যন্ত এ বছর হজের জন্য নিবন্ধনের সুযোগ পেতে পারেন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ক্ষেত্রে এবার নিবন্ধনের আওতায় আসছেন কেবল ২০২০ সালের নিবন্ধিতরা।
সাইফুল ইসলাম বলেন, “বেসরকারি নিবন্ধনের কোটতো আগের থেকেই পূরণ হয়ে আছে, শুধু সমন্বয় করার কাজ বাকি ছিল। এখন শুধু শূন্য কোটা, কেউ মারা গেলে বা কেউ অসুস্থতার কারণে না যেতে পারলে তাদের নিবন্ধন করতে হচ্ছে সরকারিভাবে। আর বেসরকারিভাবেতো ম্যানুয়ালি নিবন্ধন করা হয়। তাই তারাও ২২ মে পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ নিতে পারবে।”
সৌদি সরকারের নিয়মানুযায়ী এবার ৬৫ বছরের কেউ হজে যেতে পারবেন না। আবার নিবন্ধনকারী কেউ অসুস্থ হলে বা মারা গেলে সেই শূন্য কোটায় তার পরিবর্তে তার পরিবারের একজন সদস্য বা মনোনীত কেউ হজে যেতে পারবেন।
২০২০ সালের তিনটি প্যাকেজে নিবন্ধিত যারা এবার হজ করবেন, ২২ মের মধ্যে যে কোনো নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে তাদের ২০২২ সালের যে কোনো একটি প্যাকেজে নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে।
২০২০ সালের চেয়ে এবারের প্যাকেজে খরচ বেড়েছে। ফলে তখন যারা নিবন্ধন করেছেন, এবার তাদের বাড়তি টাকা সোনালী ব্যাংক জমা দিয়ে নিবন্ধন সারতে হবে।
যেমন ২০২০ সালে যারা সবচেয়ে বেশি খরচের প্যাকেজ ১ এর আওতায় ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন, এবার তাদের সবচেয়ে কম খরচের প্যাকেজ ২ এ নিবন্ধন করতেও ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা খরচ হবে। অর্থাৎ তারা আর ৩৭ হাজার ১৫০ টাকা জমা দিয়ে এবার হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন।
নিবন্ধনের পর কেউ যদি হজে যেতে না পারেন, তাহলে শুধু বিমান ভাড়া এবং খাবার বাবদ নেওয়া টাকা ফেরত পাবেন। তবে বিমানের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পর হজযাত্রা বাতিল করলে সেই টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন না।
নিবন্ধনের জন্য আবশ্যিকভাবে পাসপোর্ট থাকতে হবে। পাসপোর্ট স্ক্যান করে পূরণ করতে হবে নিবন্ধন তথ্য। পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে হজের দিন থেকে পরবর্তী ছয় মাস, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। হজযাত্রীর দাখিল করা পাসপোর্ট যাচাই করা হবে অনলাইনে।
আগে নিবন্ধিত কেউ পছন্দের প্যাকেজ নির্ধারণ করে নতুন নিবন্ধন না করলে এ বছর তিনি হজে যেতে আগ্রহী নন বলে ধরে নিয়ে তার আগের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
সরকারিভাবে হজে যেতে প্রথম প্যাকেজে খরচ হবে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা, আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা ।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য ন্যূনতম খরচ হবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ৪১০ সৌদি রিয়ালের সম পরিমাণ ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা আলাদাভাবে সঙ্গে নিতে হবে।
যারা যাবেন, তাদের দুই ডোজ কোভিড টিকা নেওয়া থাকতে হবে। যাওয়ার সময় কোভিড নেগেটিভ সনদ রাখার পাশপাশি কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তও জানিয়ে দিয়েছে সৌদি সরকার।