পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে পুনরায় বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে ভালোভাবে
হিসাব কষে নেওয়া দু্ই পক্ষের জন্যই প্রয়োজনীয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দুজন ‘ফ্যামিলি ল অ্যাটর্নি’ উইলকিনসন এবং
ফিঙ্কবেইনার প্রায় ১১৫টি তালাক নিয়ে গবেষণা করেছেন।
গবেষণায় দেখা যায়, গড় হিসাবে প্রথম বিয়েতে বিচ্ছেদ আসে
প্রায় আট বছরের আশপাশে। তারপর কেউ পুনরায় বিয়ে করতে চাইলে গড় হিসাবে তিন বছর অপেক্ষা
করে মানুষ।
এই সময়ে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করে, নতুন শখ জাগে, পরিবার
নিয়ে পরিকল্পনা বদলায়, সঙ্গে আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গিও বদলায়।
রিয়েল সিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই দুই আইনজ্ঞ
জানান, প্রথম বিয়ের সময়ে আর্থিক দিক থেকে বাজে অভিজ্ঞতা প্রায় অনেকেরই থাকতে দেখা যায়।
তাই দ্বিতীয় বিয়ের আগে মানুষ আরও বেশি সাবধান হয়ে যায়, শঙ্কায় থাকেন।
তাই বিয়ের আগেই বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়ে যাওয়া
জরুরি।
বিয়ের আগেই
আর্থিক বিষয়ে কথা বলা
বৈবাহিক বিচ্ছেদের একটি কারণ থাকে আর্থিক সমস্যা। দ্বিতীয়
কিংবা তৃতীয় বিয়েতেও যদি সমস্যাগুলো সমাধান না হয় তবে সমস্যার তীব্রতা সেখানে আরও বড়
হবে।
এর পেছনের একটা বড় কারণ হতে পারে আগের বিয়ের সূত্র ধরে
আসা আর্থিক বোঝা কিংবা অমিতব্যয়ী অভ্যাস।
এজন্য পুনরায় বিয়ের আগে নিজের কোনো ঋণ আছে কি-না বা ঋণ
সম্পর্কে তাদের অনুভূতি কেমন সেটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
নিজেদের খরচ নিজেরাই চালাবেন না-কি কেউ একজন অপরজনের ওপর
নির্ভরশীল হবেন সেটা বুঝতে হবে।
পাশাপাশি সংসারের খরচ সামাল দিতে কার অবদান কতটুকু হবে
সেটাও আলোচনার বিষয়। বিনিয়োগের ক্ষমতা, কৌশল, ভাবনা কার কেমন সেটাও আলোচনায় উঠে আসা
উচিত।
পারিবারিক কোনো ব্যবসা থাকলে সেটা কীভাবে চলবে এবং নতুন
জীবনসঙ্গী তাতে যুক্ত হবেন কি-না সেটা নিয়ে কথা বলতে হবে। অবসরের পরিকল্পনাগুলো নিয়েও
আলোচনা করে নেওয়া ভালো।
বিবাহ বহির্ভূত
সম্পদ
বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে এক অপরের যতটুকু সম্পদ আছে
সেটাই হবে বিবাহ বহির্ভূত সম্পদ বা ‘নন-ম্যারিটল অ্যাসেটস’। সেটা যে বিয়ের আগের সম্পদ
তার উপযুক্ত প্রমাণ অবশ্যই থাকতে হবে আইনী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।
অন্যথায় আবার যদি বিচ্ছেদ আসে তবে সেই সম্পদ সমস্যা ডেকে
আনতে পারে। আর নিজেদের মধ্যেও আলাপ হওয়া উচিত যে সেই সম্পদ ভাগাভাগি হবে কি-না বা যদি
হয় তবে কতটুকু হবে।
এই বিষয়ে আগেই একজন উকিলের সঙ্গে আলাপ করে রাখা হবে বুদ্ধিমানের
কাজ।
বিয়ের আগেই
চুক্তি
আইনের আওতায় এসে বিয়ের আগেই একটা চুক্তি করে নিতে পারেন
যে, যদি আপনাদের তালাক হয় তবে সম্পদের ভাগাভাগি কীভাবে হবে।
একে ‘প্রিনাপশল এগ্রিমেন্ট’ বলা হয়। ভবিষ্যতে অনেক বিব্রতকর
ও জটিল পরিস্থিতি থেকে সুরক্ষা দেবে এই চুক্তি।
উইল করে নেওয়া
পুনরায় বিয়ের আগে সম্পদের ভাগাভাগির ‘উইল’ করে নেওয়া খুবই
জরুরি।
স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর সম্পদের ভাগাভাগির হিসাবটা
কী হবে তা আবার বিয়ের আগেই করে নিতে হবে।
বিশেষ করে যাদের সন্তান আছে তাদের জন্য বিষয়টা আরও জরুরি।
আর এসব করার সময় অবশ্যই আইনি পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন
বিয়েতে সম্মতি দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো আলোচনা করা প্রয়োজন