সুস্থ থাকার জন্য না বুঝে বা বিশেষজ্ঞের
পরামর্শ না নিয়েই কোনো কিছু করা ঠিক না। এর মধ্যে রয়েছে না খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা
বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা।
আবার অতিরিক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার
শুচিবায়ু থাকলে যে কোনো খাবারের মান নিয়েই অস্বস্তি হতে পারে। যা এক প্রকার মানসিক
রোগের মধ্যে পড়ে।
অতিরিক্ত পানি পান
“অতিরিক্ত পানি পান ‘হাইপোনাট্রেমিয়া’
নামক গুরতর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়”, ইটদিস
নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো’র ফোর্ট কলিন্সে
অবস্থিত ‘ইউসি হেল্থ’য়ের চিকিৎসক ক্রিস্টিনা ল্যাং।
তিনি জানান, কিডনি বা বৃক্ক এক দিনে ২৮
লিটার পর্যন্ত তরল নির্গত করতে পারে। কিন্তু ঘন্টায় এর মান এক লিটার।
এর বেশি পানি পান দেহ, কোষ এমনকি মস্তিষ্কে
তরল স্থানান্তর ঘটাতে পারে। অতিরিক্ত পানি পান কিডনি থেকে তরল নিঃসরণ, ইলেক্ট্রোলাইট
(সোডিয়াম) ইত্যাদি প্রতিস্থাপন ছাড়াই বের করে দেয়। ফলে মানুষের মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত
হতে পারে।
অতিরিক্ত শরীরচর্চা
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘সার্জিক্যাল অ্যাসোসিয়েটস’য়ের
কার্ডিওভাসকুলার সার্জন এবং সার্জিক্যাল ডিরেক্টর ডা. ডেভিড এ. গ্রেনার বলেন, “ব্যায়াম
করার সময় কোষের ক্ষতি হয়।”
শরীরচর্চার সময় দেহ স্বাভাবিকের চেয়ে
কিছুটা ভিন্নভাবে নড়াচড়া করে এর ফলে শরীর দৃঢ় হয়। তাই ব্যায়ামের পরে কিছুটা ক্লান্তিভাব,
ব্যথা ও ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
তাই শরীরচর্চার পরে দেহকে স্বাভাবিক হতে
কিছুটা সময় দেওয়া বা বিশ্রাম করা প্রয়োজন। অন্যথায় অতিরিক্ত শরীরচর্চা দেহের জন্য ক্ষতি
ডেকে আনতে পারে।
অর্থোরেক্সিয়া
বিশেষজ্ঞেদের মতে, ‘পরিষ্কার খাবার’ খাওয়ার
প্রবণতা মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা’র
প্রতিষ্ঠান ‘শেপার্ড প্র্যাট’য়ের ‘সেন্টার ফর ইটিং ডিজঅর্ডার’য়ের ক্লিনিকাল কো-অর্ডিনেটর
টেরি গ্রিফিথ বলছেন, “অর্থোরেক্সিয়াতে আক্রান্ত কেউ বিশেষভাবে তাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর
খাবার থাকার বিষয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, খাবারের মানের ওপর একটি অস্বাস্থ্যকর মনোভাব পোষণ
করেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইটিং ডিজঅর্ডার
অ্যাসোসিয়েশন প্রোগ্রাম’য়ের জ্যেষ্ঠ পরিচালক লরেন স্মোলার বলেন, “অর্থোরেক্সিয়ার
মাত্রা বৃদ্ধি অপুষ্টি এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।”
সাপলিমেন্টস
কেমব্রিজ হেল্থ অ্যালায়েন্সে’য়ের অভ্যন্তরিন
রোগ-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক পিটার
কোহেন বলছেন, “খাদ্যের তালিকাগত পরিপূরকগুলোর মধ্যে ভিটামিন, খনিজ, প্রোবায়োটিক এবং
অন্যান্য নতুন ধরনের উপাদান রয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেইশন
(এফডিএ)’র এগুলোকে খাবারের তালিকায় রেখেছে। ফলে ভিটামিন ট্যাবলেট বা এই ধরনের বড়ি উৎপাদনকারী
প্রতিষ্ঠানগুলো যখন-তখন নতুন পণ্য বাজারে ছাড়তে পারে।”
এখন এফডিএ’র কাজ হল বাজারে এই সকল পণ্য
আসার আগে তার মান যাচাই করা এবং ক্ষতিকারক হলে সেসব পণ্যকে চিহ্নিত করে দোকান অথা বাজার
থেকে সরিয়ে দেওয়া।
এগুলো সঠিকভাবে করা না হলে অপ্রত্যাশিত
ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের উপবাস
ডায়াবেটিস রোগীদের বিরতিহীন উপবাস করার
আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ রবার্ট
র্যাটনার বলেন, “ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (আইএফ)’ এবং ‘টাইম রেস্ট্রিকটেড ফিডিং (টিআরএফ)’
দুটোই রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। যার অর্থ ক্যালরি গ্রহণের সীমাবদ্ধতার সময় হাইপোগ্লাসেমিয়া
এড়াতে ওষুধের সামঞ্জস্যতার প্রয়োজন।”
গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে, দৈনিক খাদ্যাভ্যাস
পরিবর্তনের সঙ্গে ওষুধ গ্রহণের সামঞ্জস্যতাও রক্ষা করতে হবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন
স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগায় যেসব খাবার