প্রিমিয়ার লিগে গত বৃহস্পতিবারের রোমাঞ্চকর
ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছে এভারটন। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা দলটি পরের অর্ধে ঘুরে
দাঁড়িয়ে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি লিগে টিকে থাকাও নিশ্চিত করেছে।
এই ম্যাচে হেরে গেলে অবনমনের ঝুঁকি অনেকটাই
বেড়ে যেত এভারটনের। মহামূল্যবান এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে কাজ সেরে ফেলল তারা।
৩৭ ম্যাচে ১১ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে
১৬ নম্বর স্থানে আছে এভারটন।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজিতেই এভারটন
দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই উল্লাসে ফেটে পড়ে। মনে হচ্ছিল
যেন, তারা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে; ১৯৮৭ সালে সবশেষ যেমনটা জিতেছিল দলটি।
৪৩ বছর বয়সী ল্যাম্পার্ড তার সাবেক ক্লাব
চেলসির হয়ে তিনটি প্রিমিয়ার লিগ, একটি করে চ্যাম্পিয়ন্স
লিগ ও ইউরোপা লিগ ছাড়াও স্বাদ পেয়েছেন আরও অনেক শিরোপার। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে এভারটনের
স্রেফ অবনমন এড়ানো তার কাছে খুব বড় কিছু হওয়ার কথা নয়। তবে তার কাছেও উপলক্ষটি বিশেষ
হয়ে উঠেছে নিজের ও ক্লাবের বাস্তবতার জন্য।
দলের ব্যর্থতার জন্য গত বছরের শুরুতে চেলসি
কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ল্যাম্পার্ডকে। এরপর গত জানুয়ারিতে আড়াই বছরের জন্য
এভারটনের কোচ হন তিনি।
তবে নতুন দায়িত্বেও সময়টা বেশ কঠিন গেছে
ল্যাম্পার্ডের। একের পর এক বাজে পারফরম্যান্সে পয়েন্ট টেবিলে কেবলই নামছিল তার দল।
শঙ্কা জেগেছিল অবনমনের। তেমন কিছু হলে যা গত তিন বছরে ৩৭ কোটি ২০ লাখ ইউরো ক্ষতির মুখে
থাকা ক্লাবটির জন্য হতো বড় এক ধাক্কা। এরই মধ্যে তাদের বেশ কিছু স্পন্সর চুক্তিও স্থগিত
করেছে। এছাড়া নতুন স্টেডিয়াম তৈরির খরচের বিষয়টি তো আছেই, যেখানে তাদের ২০২৪ সাল থেকে
খেলার কথা রয়েছে।
আর কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুর অধ্যায়ে ল্যাম্পার্ডের
জন্য এটা ছিল অগ্নিপরীক্ষা। তিনি নিজেই আগে বলেছিলেন, এভারটনকে লিগে টিকিয়ে রাখাটা
তার কাছে চেলসির হয়ে লিগ শিরোপা জেতার সমান মূল্যবান হবে।
ম্যাচ শেষে অভিব্যক্তি জানাতে গিয়ে তাই আবেগ
ধরে রাখতে পারেননি ল্যাম্পার্ড।
“এটি আমার ফুটবল ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর
মধ্যে একটি। আমি খুব সৌভাগ্যবান যে খেলোয়াড় এবং একজন কোচ হিসেবে দারুণ কিছু সময়
কাটিয়েছি, বিশেষ করে চেলসিতে। কিন্তু অবনমনের ঝুঁকিতে থাকলে যে হতাশা এবং মরিয়া ভাব
সৃষ্টি হয়, তা একেবারেই ভিন্ন।”
মাঠে ও মাঠের বাইরে ক্লাবের অবস্থা এতটাই
নাজুক ছিল যে সেখান থেকে টিকে থাকাটাই ল্যাম্পার্ডের কাছে বিশেষ কিছু।
“মনে হচ্ছিল, (ম্যাচ শেষে) আমি কেঁদে ফেলতে
পারি। আমাদের উদযাপন নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারে না। এটা বলা সহজ যে, ‘কিন্তু তোমরা
তো কিছুই জিততে পারোনি।’”
“তাদের বলতে চাই, কয়েক মাস এই ক্লাবে এসে
কাজ করুন এবং সমস্যাগুলো দেখুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন এই লিগে টিকে থাকাটা ক্লাবের
সবার জন্য কী অর্থ বহন করে। এটি এভারটনের ইতিহাসে একটি বিশেষ রাত।”