শনিবারের এই ভোটে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে অভিজ্ঞ রাজনীতিক লেবার পার্টির নেতা অ্যান্থনি আলবানিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তন, এই দুটি ইস্যুই এবার ভোটারদের মত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা, পাশাপাশি এ ভোটকে মূলত নেতাদের চরিত্র বিষয়ে ‘গণভোট’ হিসেবেও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
জনমত জরিপগুলোতে লেবার পার্টি সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে; যদিও এর আগের নির্বাচনের ফলাফল জনমত জরিপগুলোকে ভুল প্রমাণ করেছিল।
সিডনির একটি কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ছবি: রয়টার্স
জন হাওয়ার্ডের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের নেতা মরিসন তার পুরো মেয়াদ শেষ করতে পেরেছেন। মরিসন অস্ট্রেলিয়াকে এমন এক সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন যখন দেশটি একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারীর দাপট দেখেছে।
মহামারী মোকাবেলায় তার নেতৃত্ব প্রথম দিকে সাফল্য হিসেবে গণ্য হলেও পরের দিকে তা অপর্যাপ্ত পরিকল্পনার দায়ে সমালোচিতও হয়েছে।
মরিসনকে অবশ্য নিজ দলের সদস্যদের থেকে শুরু করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টেরও নানান সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। নিজের অজনপ্রিয়তার কথা মেনে নিয়ে তিনি যে ‘আরও সংবেদনশীল’ নেতা হতে পারতেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন মরিসন।
মহামারীর সময় নিজের ভূমিকার পক্ষে সাফাইও গেয়েছেন তিনি। বলেছেন, মহামারীর সময়ে এমনটাই দরকার ছিল।
অন্যদিকে আলবানিজ বলছেন, আলাদা তিন নেতার নেতৃত্বে প্রায় এক দশক ধরে চলা রক্ষণশীল সরকার অনেক সময় পেয়েছে।
“এই সরকার প্রায় এক দশক ধরে আছে। এই প্রধানমন্ত্রী চার বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ তিনি এখন বলছেন, ‘যদি আপনারা স্কট মরিসনকে ভোট দেন, তাহলে আমি বদলে যাবো’।
সিডনির আরেকটি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ। ছবি: রয়টার্স
“আপনারা যদি সত্যিই পরিবর্তন চান, তাহলে সরকারই বদলে ফেলুন,” বলেছেন তিনি।
কঠিন কয়েক বছর যাওয়ার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এ সময়ে দেশ পরিচালনার মতো যথেষ্ট অভিজ্ঞ নন- তার বিরুদ্ধে থাকা এই দৃষ্টিভঙ্গি মোকাবেলায় আলবানিজ ভোটারদেরকে ‘নিরাপদ পরিবর্তনের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বেশিরভাগ আসনে লিবারেল-ন্যাশনালদের সঙ্গে লেবার প্রার্থীদের লড়াই হলেও কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে এই দুই দলের প্রার্থীদেরকে হাই প্রোফাইল স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও লড়তে হচ্ছে।
শনিবার অস্ট্রেলিয়ায় পূর্বাঞ্চলীয় স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ভোটদান বাধ্যতামূলক, এবার প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ ব্যালটে তাদের রায় জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোটাররা প্রতিনিধি পরিষদের সব আসনের এমপি নির্বাচিত করার পাশাপাশি সেনেটের অর্ধেকেরও বেশি আসনের প্রতিনিধি বেছে নেবেন।
মূল লড়াই হবে ক্ষমতাসীন লিবারেল-ন্যাশনাল জোট ও লেবারদের মধ্যে। সরকার গঠনের জন্য প্রতিনিধি পরিষদের ১৫১টি আসনের অন্তত ৭৬টি জিততে হবে। যদি কোনো দলই তা অর্জন করতে না পারে তাহলে ছোটখাট দল ও স্বতন্ত্র এমপিদের সমর্থনের ভিত্তিতেই নতুন সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ঠিক হবে।