এত বড় অর্জনের হাতছানি, স্বাভাবিকভাবেই চাপ অনুভব করার কথা। তবে লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ বললেন, কোনো ধরনের চাপে নেই তার দল।
গত ফেব্রুয়ারিতে চেলসিকে হারিয়ে লিগ কাপের শিরোপা জেতে লিভারপুল। এরপর গত শনিবার একই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।
প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ড মাঠে গড়াবে রোববার। লিভারপুলের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শিরোপা ভাগ্য নিজেদের হাতে রেখেছে সিটি।
একই সময়ে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ানডারার্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে লিভারপুল। আর অ্যাস্টন ভিলার মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি।
৩৭ ম্যাচে ২৮ জয় ও ৬ ড্রয়ে পেপ গুয়ার্দিওলার দলের পয়েন্ট ৯০। ২৭ জয় ও ৮ ড্রয়ে লিভারপুলের পয়েন্ট ৮৯।
নিজেদের মাঠে জিতলে অন্য কোনো হিসাব ছাড়াই এই নিয়ে শেষ পাঁচ মৌসুমে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন হবে সিটি। তবে তারা পা হড়কালেই সুযোগ পেয়ে যাবে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। সেক্ষেত্রে নিজেদের ম্যাচে জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধার করবে ২০১৯-২০ আসরের চ্যাম্পিনরা।
বিন স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপচারিতায় শুক্রবার সালাহ বলেন, হাল ছাড়ছেন না তারা। আশায় আছেন, সিটির হোঁচট আর নিজেদের জয়ের।
“আমি চাই সিটি হেরে যাক বা ড্র করুক, তাহলে আমরা লিগ শিরোপা জিততে পারব।”
“আমরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছি, সবাই খুবই রোমাঞ্চিত। এই পরিস্থিতি দুই বছর আগেও হয়েছিল এবং তারা লিগ জিতেছিল। এবার আমরা সবাই আশাবাদী। আর এটাই তো এখন আমাদের হাতে আছে-নিজেদের ম্যাচ অবশ্যই জিততে হবে এবং এরপর দেখা যাক কী হয়।”
২০১৮-১৯ আসরে সেবারও লিগ শিরোপা গড়িয়েছিল শেষ রাউন্ডে। সেই শিরোপা লড়াইয়েও ছিল লিভারপুল ও সিটি। সেদিন জিতেছিল দুই দলই, ১ পয়েন্টে এগিয়ে শিরোপা উৎসব করেছিল সিটি।
এবার ভাগ্যক্রমে গল্পটাকে নতুনভাবে লিখতে পারলে তিন বছরে দ্বিতীয় লিগ শিরোপা জিতবে লিভারপুল। এরপর আগামী শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়ালের মুখোমুখি হবে তারা। ২০১৭-১৮ আসরের ফাইনালে মাদ্রিদের দলটির বিপক্ষেই হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের। সেদিন ম্যাচের প্রথম দিকেই চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছিলেন সালাহ, পরে তারা হেরে গিয়েছিল ৩-১ গোলে।
নিজেরা ফাইনালে উঠেই সালাহ বলেছিলেন, শিরোপার মঞ্চে রিয়ালকে চান তিনি। এবার বললেন, অধীর অপেক্ষায় আছেন ম্যাচটির জন্য। যেন পুরনো হিসাব-নিকাশ মেলাতে চান মিশরের ফরোয়ার্ড।
“যদি আমরা রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হতে পারতাম, যখন আমি এমনটা বলেছিলাম তখন বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছিল যেন তাদের সম্পর্কে আমি কিছু ভুল বলেছিলাম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের কথা বলছি আমি, আর কথাটি বলেছিলাম আগে যা ঘটেছে তার কারণে।”
“ম্যাচটি কঠিন হবে এবং এই দলটি প্রায় সব শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জিতেছে। তবে আমি ফাইনাল নিয়ে খুবই রোমাঞ্চিত এবং আশা করি আমরা জিতব।”
লিগ টেবিলে লম্বা সময় ধরে সিটির সঙ্গে লড়াই চলছে লিভারপুলের। এই পথচলার প্রায় পুরোটায় পেছনে থেকেই আজকের পর্যায়ে এসেছে লিভারপুল। ওয়ানডারার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন তাই ক্লপ বললেন, তাদের তো হারানোর কিছুই নেই।
“অন্য দল চাপে আছে কিনা এনিয়ে বলতে পারছি না, তবে আমরা কোনো চাপে নেই।”
“আমরা জানি যে, আমাদের ম্যাচটা জিততে হবে। আর আমাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক দিন ধরেই এমন। না জিতলে কী হবে, এমন ভাবার সুযোগ নেই…আমাদের জন্য এটা বেশ ইতিবাচক। এটা বিশেষ কিছু। কোনো কিছু হারানোর থাকলে তার অনুভূতি ভিন্ন, কিন্তু আমাদের তো হারানোর কিছু নেই।”
শিরোপা লড়াইয়ের সব চাপ যেন প্রতিপক্ষের ওপর দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন ক্লপ। যেমনটা পয়েন্ট টেবিলে করে আসছেন লম্বা সময় ধরে।
“আমি যেখানেই ছিলাম, জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয় আমাকে জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছে। রোববার যা-ই হোক, আমরা থামব না। আমরা চেষ্টা করা বন্ধ করব না। হ্যাঁ, ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে সেরা প্রতিপক্ষ আমাদের সামনে…তবে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছি আমরা, যেটা (সিটির জন্য) খুব ভালো কিছুও নয়। তাই দেখা যাক কী হয়।”